নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবনের সামনে থাকা মূল্যবান সেগুন, কড়ই, জামসহ ৮টি বড় গাছ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কেটে ফেলেছেন গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, প্রথম দফায় খাগড়াছড়ি বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে শিক্ষক ডরমেটরিতে বেশ কয়েকটি গাছ গত বছরের ডিসেম্বরে কাটা হয়। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবনের সামনে থাকা গাছগুলো কাটতে জেলা প্রশাসন কিংবা বনবিভাগ কারোই অনুমতি নেয়া হয়নি। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো গাছ কাটতে হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে। আর অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহ আহম্মদ নবী বললেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে না।
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ঐতিহাসিক মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশে যখন এক কোটি গাছের চারা লাগানো হচ্ছে সরকারিভাবে, সেখানে কিনা খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে করোনার ভয়াবহকালে চলছে নীরব বৃক্ষনিধন। এভাবে বৃক্ষনিধনের মাধ্যমে পাহাড়ের পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে।
কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রভাষক জানান, গাছগুলো প্রায় বিশ-বাইশ বছর আগে লাগিয়েছিলেন এই কলেজের এক সময়ের শিক্ষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শেখর দস্তিদার। ওই গাছগুলো কেটে ফেলার পর গাছের গোড়া বাঁধানো ছিল। ছাত্রছাত্রীরা সেখানে বসতো। ফেসবুকে লেখালেখি এবং সাংবাদিকেরা যোগাযোগ করার পর গাছের গোড়াগুলোও এখন তুলে ফেলে প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের। অন্যদিকে জানা গেছে, কলেজের রসায়ন ভবনের জন্য নকশা বহির্ভূত একটি কক্ষ বাড়ানো হয়। সেখানেও সাবেক অধ্যক্ষ দিলীপ কুমার দাস-এর লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহ আহম্মদ নবী এ বিষয়ে বলেন, গাছগুলো মরে যাচ্ছিল তাই কেটে ফেলা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না বিধায় অনুমতি নেয়া হয়নি।
খাগড়াছড়ি বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম বলেন, কলেজের গাছ কাটার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রফেসর ড. শাহ মো. আমির আলী বলেন, যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে জেলা প্রশাসন ও বন-পরিবেশরক্ষা কমিটির অনুমতি নিয়ে গাছ কাটতে হয়। অনুমতি না নিয়ে কেউ গাছ কাটতে পারে না।