অনিরাপদ এক্সপ্রেসওয়ের নিয়ন্ত্রক কে

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের নিমতলা এলাকায় বন্দর থানার সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ছিটকে নিচে পড়ে মোহাম্মদ শফিক (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত মোহাম্মদ শফিক সাইকেল চালিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের নিচ দিয়ে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি যে স্থান থেকে ছিটকে পড়েছে, সেখানে বাঁক রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে তীব্র গতিসম্পন্ন গাড়িটি নিচে পড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের দেওয়ানহাট, বারিক বিল্ডিং, সল্টগোলা, ইপিজেড, কাঠগড় এলাকায় বাঁক রয়েছে। বাঁকগুলোতেও গাড়ির গতি কমানোর প্রবণতা কম চালকদের।

এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত বছরের আগস্ট মাসে পরীক্ষামূলক চালুর পর দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। চলতি নভেম্বর মাসেই দুটি প্রাইভেট কার উল্টে যায় এই উড়ালসড়কে। মূলত ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বাঁক, চালকদের গতিসীমা না মানা এবং বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সিডিএ বলছে, এগুলো স্বাভাবিক বাঁক। চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই। গতিসীমা না মেনে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।

এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলরত গাড়ির অধিকাংশই সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। এ ছাড়া বড় একটি অংশ কার ও মাইক্রোবাস। চলাচলের সময় অধিকাংশ গাড়িই গতিসীমা মেনে চলছে না। গতিসীমার মাপার জন্য কোথাও নেই যন্ত্র বা ক্যামেরা। কিছু স্থানে গতিরোধক থাকলেও নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকেরা।

বহু কাঙ্ক্ষিত এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার পর থেকেই কোনো না কোনো বিড়ম্বনা তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। এত দীর্ঘ একটি উড়ালপথে প্রথমত আলোর অভাব। সে কারণে এ পথে প্রায় সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে যথাযথ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহনের গতিসীমার কোনো ঠিক নেই। এটা অনেকটা বড়লোকের সন্তানদের রেসিং ফিল্ডে পরিণত হয়েছে। দেখা যায় প্রায় সময় তারা প্রতিযোগিতা করে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালায় এখানে। বুধবারের দুর্ঘটনাটিও ঘটেছে সে কারণে।
আমরা ঘটনার তদন্ত চাই। দোষীর শাস্তি চাই এবং মৃত মানুষের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চাই।