সুপ্রভাত ডেস্ক »
গত কয়েক বছরে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ। বৃক্ষনিধনের মাত্রা বাড়ায় ঊর্ধ্বগামী হয়েছে তাপমাত্রা। এই বাড়তি তাপমাত্রা প্রভাব ফেলছে মানুষের জীবনযাপন থেকে শুরু করে শারীরিক স্বাস্থ্যে।
অতিরিক্ত গরম বা হিট ওয়েভের কারণে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। হার্ট ফেল থেকে শুরু করে স্ট্রোক সবই হচ্ছে গরমের কারণে। তবে সম্প্রতি জানা গেলে আরেকটি ভয়াবহ তথ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের মতে, তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে নারীদের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রবণতা (প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি) লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সম্প্রতি মেডিকেল জার্নালে ঔঅগঅ নেটওয়ার্ক ওপেনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি জনবহুল এলাকায় ৫৩ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে একটি গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, বিগত ২৫ বছরে অকাল জন্মের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ২ শতাংশ।
গবেষণায় বলা হয়, সাধারণত ৩৭ সপ্তাহের আগে ডেলিভারি হয় না। কিন্তু ক্রমাগত পরিবর্তিত আবহাওয়া এবং বাড়তে থাকা তাপমাত্রার কারণে ৩৭ সপ্তাহের আগেই শিশুদের জন্ম দিচ্ছেন নারীরা। এই অকাল জন্মের হার নিম্নবিত্ত মানুষের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যেসব মায়েরা বাড়িতে শীতল পরিবেশে থাকেন তাদের অকাল জন্মের হার কিন্তু অনেকটাই কম। কিন্তু যাদের বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই, কিংবা যারা গর্ভাবস্থায় কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত যাওয়া-আসা করেন, তাদের ক্ষেত্রে এই অকাল জন্মের হার অনেকটাই বেশি।
গবেষকরা বলেন, যেসব মায়েরা গর্ভাবস্থায় কাজের জন্য বাইরে বের হচ্ছেন তাদের ক্রমাগত সূর্যের তাপের সংস্পর্শে থাকতে হচ্ছে। সূর্যের তাপের কারণে শরীর খুব তাড়াতাড়ি ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, ফলে শরীরের হরমোনের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। অন্যদিকে, অতিরিক্ত গরমে একাধিক মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে সুস্থ স্বাভাবিক শিশু জন্ম দিতে পারেন না তারা।
৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মায়েদের ওপর এই গবেষণাটি করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেসব স্থানের তাপমাত্রা অন্যান্য স্থানের তুলনায় অনেকটাই বেশি সেসব স্থানে এই গবেষণা করা হয়।
গবেষণায় আরও একবার একটি কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে আগামীতে যদি প্রকৃতির ভারসাম্য ঠিক না থাকে তাহলে শুধু শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে তা নয়, আগামী প্রজন্মকেও জন্ম থেকে হতে হবে একাধিক সমস্যার মুখোমুখি। বিষয়টি যথেষ্ট চিন্তার। তথ্যসূত্র: নিউজ নেশন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, ওয়েবএমডি