চবি প্রতিনিধি »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ম বারের মতো শুরু হয়েছে প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন-২০২৫। ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অগ্রগতির জন্য যুব নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী উদ্ভাবনের প্রসার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার (সিইউমুনা) উদ্যোগে আয়োজিত হয় এ সম্মেলন।
গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটোরিয়ামে ৪ দিনব্যাপী এ আয়োজনে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় ।
সম্মেলনে কার্যনির্বাহী সদস্য সুমাইয়া তাসনীম শিমুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. আমীর মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ, ব্যাংকিং ও বীমা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
তরুণ শিক্ষার্থীরা এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হিসেবে ৮টি কমিটিতে বিভক্ত হয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, কূটনীতি পরিচালন ও দলবদ্ধভাবে কাজ করে। প্রতিনিধিগণ উপযুক্ত উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে উন্নতি সাধন এবং সকলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা, দীর্ঘমেয়াদী অর্থনীতির বিস্তার ও বিকাশে সম্ভাব্য বাধা উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সময়োপযোগী সমাধান নিরূপণ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে।
এবারের সম্মেলনে ১০টি কমিটি রয়েছে। কমিটিগুলো হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি), জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ-১ (ডাইসেক), জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচআরসি), বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থা (ডাব্লিউআইপিও), জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনআইডিও), জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (ইউএনসিটিএডি), জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আইপি) এবং অন্তর্র্বতীকালীন বাংলাদেশ সরকার।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, আমাদের এই তরুণ প্রজন্মের সামনে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের হাতে পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। তারা আগামীতে সমাজ ও রাস্ট্র সংস্কারে ভূমিকা পালন করবে। তরুণ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কানেক্টিভিটি তৈরি করছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে।
লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমীর মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ, প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বললেন, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। আমাদের উদ্ভাবনী উপায়গুলি নিয়ে ভাবতে হবে কিভাবে তরুণদের অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত করা যায় এবং কীভাবে তাদেরকে বিশ্বব্যাপী অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়। তরুণরা দেশ রাষ্ট্রের সম্পদ তোমাদেরকে দেশের দায়িত্ব নিতে হবে।
দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, বৈশ্বিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবনী ধারণা দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করা অপরিহার্য। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘের এই অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য সমাধান অন্বেষণ এবং আরও সংযুক্ত ও উন্নত বিশ্বে অবদান রাখার জন্য একটি অর্থবহ স্থান তৈরি করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার মহাসচিব ইশফাকুল কবির আসিফ বলেন, আমি এখানে আগত প্রতিটি প্রতিনিধিকে এই সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং নিজেদেরকে বিকশিত করার জন্য অনুরোধ করছি। এই সম্মেলনে আগামী ৪ দিন আপনারা বৈশ্বিক বিষয়, কূটনীতি এবং বিতর্ক সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি আপনাদের সকলকে এই সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য স্বাগত জানাই।
সম্মেলনে ৮টি কমিটি, ৫০টি প্রতিষ্ঠানের ৪০০ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নাইজেরিয়া , সোমালিয়া, ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, আইভরি কোস্ট, উগান্ডা, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া থেকে ডেলিগেট অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্যক্তি বা দলগত পর্যায়ে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা হিসেবে থাকছে, বেস্ট ডেলিগেট, আউটস্ট্যান্ডিং ডেলিগেট, স্পেশাল মেনশন-১ এবং স্পেশাল মেনশন-২ পুরস্কার।