নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
এবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে (ডিএসএ) ৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য তিন জেলার সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও রাঙামাটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনুর কন্যা নাজনীন আনোয়ার।
১৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই’কে আগামী ১৩ নভেম্বরে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেছেন।
মামলায় দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক ফজলে এলাহী, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক অনির্বাণ শাহরিয়ার, জাগো নিউজের রাঙামাটি প্রতিনিধি সাইফুল হাসান, দীপ্ত টিভির বিশেষ প্রতিনিধি বায়েজিদ আহমেদ, টিবিএসের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি দিদারুল আলম ও বণিক বার্তার রাঙামাটি প্রতিনিধি প্রান্ত রনির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করে অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরো আসামীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে বাদিনি এবং তার মা (সাবেক এমপি ফিরোজা বেগম চিনু) সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অপদস্থ হয়ে মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৩, ২৫, ২৬, ২৯, ৩১, ৩৪, ৩৫ ও ৩৭ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে নিজ সম্পাদিত অনলাইন দৈনিক পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রামে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের ডিসি বাংলো পার্কে অবস্থিত ‘পাইরেটস্’ রেস্টুরেন্ট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে সাংবাদিক ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেন সাবেক এমপি ফিরোজা বেগম চিনুর কন্যা নাজনীন আনোয়ার। এই মামলায় গত ৭ জুন সন্ধ্যায় ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তার করে রাঙামাটির কোতোয়ালী থানা পুলিশ। ৮ জুন রাঙামাটির আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান ফজলে এলাহী। এরপর ১৪ জুন চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত থেকে স্থায়ী জামিন পান তিনি। গ্রেপ্তারের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে সাংবাদিক ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও জামিন দাবিতে সরব থাকার জের ধরেই এবার ফজলে এলাহীসহ আরও ৫ সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করে মামলা করেছেন এমপি কন্যা নাজনীন আনোয়ার। নাজনীন আনোয়ার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম এর স্ত্রী।
এদিকে আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টে মামলা করে সাংবাদিকদের হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক হেফাজত সবুজ বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার এই অপচেষ্টা রুখতে হবে সবাইকে সম্মিলিতভাবে। রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সৈকত বাবু ও সাধারন সম্পাদক মিশু দে পৃথক এক বিবৃতিতে এই মামলাকে ‘হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত’ দাবি করে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।’