সুপ্রভাত ডেস্ক »
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ না কমিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বেসরকারি আমদানিকারকদের ৫ মিলিয়ন ডলারের কয়লা অন-ক্রেডিটে আমদানির সুযোগ দিতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
চলমান ডলার সংকটে কয়লা আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কয়েকটি কোম্পানি অন-ক্রেডিটে কয়লা আমদানির সুযোগ চেয়ে আবেদনের পর এ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তপন কান্তি ঘোষ টিবিএসকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকিতে আমদানির সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আমদানিকারককে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিতে হবে।’ খবর টিবিএস’র।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মূলত বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা বিবেচনায় কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে বাকিতে আমদানির মূল্যসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ সভা ডাকা হয়।
বর্তমান আমদানি নীতি আদেশে বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য বছরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য বাকিতে আমদানি করার সুযোগ রয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য আমদানিকারকরা যাতে বেশি কয়লা আমদানি করতে পারেন, সেজন্য এই সীমা বাড়িয়ে ৫০ লাখ ডলার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
দেশে কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যতম। ১৩২০ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সম্প্রতি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে ব্যাপক লোডশেডিং সৃষ্টি হয়েছে দেশে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে বাকিতে কয়লা আমদানি করে আসছিলো। জানা গেছে, ৩৬ কোটি ডলার বাকি পড়েছে কেন্দ্রটির।
এছাড়া দেশের আরেক বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও কয়লার সংকটে উৎপাদন ক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগাতে পারছে না। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন হাজার হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশ কয়লা আমদানিকারক সমিতির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আতিকুল হাসান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তে কয়লা আমদানি সহজ হবে। সরবরাহও বাড়বে।
একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তে এই মুহুর্তে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিশেষ উপকার হবে না। কারণ ৫০ লাখ ডলারে ৫৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টন কয়লা আমদানি করা যেতে পারে। যেটা দিয়ে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট ১০ দিন পর্যন্ত চলতে পারবে।’