সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
টেস্টে তাকেই বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটার ভাবা হতো। প্রায় শুরু থেকে টেস্টে মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে নিয়মিত রান বেরিয়ে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার পুরস্কার হিসেবে টেস্টে ক্যাপ্টেন্সিও পান মুমিনুল। কিন্তু একটা সময় এসে বিশেষ করে ২০২১ সালের জুলাই জিম্বাবুয়ে সফরের পর থেকে মুমিনুল হক আস্থা হারিয়ে ফেলেন অনেকটাই। ব্যাটের তেজও কমে যেতে থাকে। এর মধ্যে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮৮ রান করার পর থেকে হঠাৎ মুমিনুল হকের ফর্ম খুব খারাপ হতে থাকে। নিজেকে হারিয়ে ফেলেন এ ছোটখাট গড়নের বাঁ-হাতি ব্যাটার। রীতিমত রান খরা নেমে আসে তার ব্যাটে। খারাপ খেলার মাত্রা প্রবল হতে থাকে। একদমই রান করতে ভুলে যান মুমিনুল। ফর্ম এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ২০২২ সালের জুনে অধিনায়কত্ব হারিয়ে ফেলেন। তারপর ১৭ ইনিংসে শুধু একবার পঞ্চাশের ঘরে (২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বরে মিরপুরের শেরে বাংলায় ভারতের বিরুদ্ধে ৮৪) পৌঁছাতে সক্ষম হন মুমিনুল হক। তারও অনেক থেকে শতরান ছিল না ব্যাটে। শেষ সেঞ্চুরি করেছেন দুই বছরের বেশি সময় আগে ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল পাল্লেকেলেতে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪৩১ মিনিটে ৩০৪ বলে ১১ বাউন্ডারিতে ১২৭ রানের ইনিস খেলেন মুমিনুল হক। তারপর ২৭ ইনিংস পর গতকাল আবার টেস্ট শতক মুমিনুলের। মাঝের সময়টায় তিনবার পঞ্চাশের ঘরে পা রাখলেও শতকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। দু’বার আশির ঘরে আর একবার ৭০-এ গিয়ে আউট হয়েছেন মুমিনুল হক। এর ভেতর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সাথে ৮৪ রানের ইনিংসটি মুমিনুল হককে আবার সাহস জোগায়। আফগানিস্তানের সাথে শেরে বাংলায় এ টেস্টের প্রথম ইনিংসেও রান পাননি মুমিনুল। ফিরে পান ১৫ রানে। সেই ১৫ রানও যে খুব আস্থা ও আত্মবিশ্বাসে করেছেন, তা নয়। গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে আবার নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন মুমিনুল। খেলেছেন নিজের মত। শুরুতে খানিক আড়ষ্ট ছিলেন। কিছু শট খেলেছেন আত্মবিশ্বাস কম নিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে কিছু শট এদিক-ওদিক চলে যায়। দেখে মনে হচ্ছিল এই বুঝি আউট হযে যাবেন। তারপর সময় গড়ানোর সাথে সাথে আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। শটের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রন চলে আসতে থাকে। প্রথম পঞ্চাশ খেলতে সময় নেন ৯২ মিনিট। বল খেলেন ৬৭টি। হাফ সেঞ্চুরির ২৮ রান আসে শুধু বাউন্ডারি (৭ টি) থেকে। পরের পঞ্চাশও প্রায় একই গতি ও ছন্দে পূর্ণ করেন মুমিনুল। এরপর শতক থেকে মাত্র ৫ রান দুরে অপরাজিত অবস্থায় চা বিরতিতে সাজঘরে ফেরত আসেন মুমিনুল। চা বিরতির পর আর বেশি সময় নেননি। ১২ মিনিট পর আফগান পেসার ইয়ামিন আহমাদজাইয়ের খাট লেন্থের বলকে উইকেটরক্ষক ও স্লিপের ওপর দিয়ে থার্ডম্যানে গলিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শতকপূর্ণ করেন মুমিনুল।
১৯০ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ১২৩ বলে একডজন বাউন্ডারিতে পৌঁছে যান তিন অংকে। খবর জাগোনিউজ’র