২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। করোনাকালে দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে হাইকমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘কোভিড ১৯ তথা করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে যে ভয়াবহ মহামারি চলছে তা থেকে রাতারাতি উত্তরণ পাওয়া সম্ভব নয়। সারাবিশ্বে প্রচুর লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, প্রতিদিন এই ভাইরাসের কারণে মৃত্যুবরণকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের সকল দেশেই এই রোগের প্রতিশেধক আবিষ্কারের প্রক্রিয়া চলমান।
করোনা যার সাথে সাথে আমাদের জীবনে আরও কিছু নতুন শব্দ হোম কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, লকডাউন। লকডাউন নামক চাপানো ছুটিতে আর করোনার ভয়াবহতায় আমরা অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। সময় থেকে পালিয়ে থাকা যায় না মেনে নিচ্ছি, কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলাটাই মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ। তাই এ সময়টা কাজে লাগানোর জন্য যোগব্যায়াম বা ইয়োগা একটি ভাল মাধ্যম হতে পারে।’
বিজ্ঞপ্তিতে যোগব্যায়ামের ফলপ্রসূতা সম্পর্কে আরো বলা হয়, ‘যেহেতু আমরা এখন একটি অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তাই যোগব্যায়াম করলে আমরা যেসব উপকার পাবো তা হলো :
* আমাদের মন শান্ত হবে, আমরা যে কোনো কাজ একাগ্রচিত্তে করতে পারবো।
* বাসায় শুয়ে বসে থেকে যেহেতু আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকছে না তাই এই ব্যায়াম আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
* সমসাময়িক অবস্থায় আমরা যেহেতু অনেক বেশি মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগছি এতে আমাদের ঘুমের সমস্যা হয়। যোগব্যায়াম আমাদের প্রশান্তির ঘুম হতে সহায়তা করবে।
* এই ব্যায়াম আমাদের শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে আনবে। চলাফেরা করে এক ধরনের স্বস্তি অনুভব করা যাবে।
* কাজে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে কাজ করার প্রতি এক ধরনের স্পৃহা তৈরি হবে।
* এই ব্যায়ামের মাধ্যমে যে কোনো কাজে আগের চেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
* বাসায় থাকার ফলে অনেকেরই নড়াচড়া কম করা হয়। এতে হজম প্রক্রিয়ায় অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যোগব্যায়াম শরীরের হজম শক্তিবাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।
* এই ব্যায়াম করার ফলে শরীরের ভেতরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে সাথে চুল ও ত্বকও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠে।
* বাতের ব্যথাসহ শরীরের বিভিন্ন ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে যোগব্যায়াম।
* নিয়মিত যোগব্যায়াম আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যোগব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে টিস্যু এবং পেশিকে শক্তি দেয়। শ্বেতকণিকাগুলোকে আরও উজ্জীবিত করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
যোগব্যায়াম একটি প্রাচীন জীবনাচরণ পদ্ধতি যার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব। যোগের মাধ্যমে শরীর ও মনে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। এটি সম্পূর্ণভাবে মানবিক, প্রক্রিয়ামূলক এবং বিজ্ঞানসম্মত একটি বিষয়। এখন আমদের হাতে রয়েছে অফুরন্ত সময়। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে একবার যোগব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুললে এখন যেমন শরীর ও মন স্থির রাখতে সহায়তা করবে ঠিক তেমনি ভবিষ্যতেও কাজের একাগ্রতা, শারীরিক স্বস্তি, মানসিক প্রশান্তি, সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে সহায়তা করবে। তাই এ সময়ে যোগব্যায়াম করুন নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখুন দীর্ঘদিন।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগ অনুশীলনের উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগদিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিবছর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন, চট্টগ্রামের উদ্দ্যোগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রাঙামাটিতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে কর্মশালার আয়োজন করা হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক ইয়োগা দিবস ২০১৯ অত্যন্ত সফলভাবে আয়োজন করা হয়। যদিও এই বছর সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্যে ঘর থেকেই আন্তর্জাতিক যোগদিবস-২০২০ উদযাপনের আহবান জানানো হয়েছে।
Uncategorized