সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
চেলসিকে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ১১-১০ গোলে পরাজিত করে কারাবাও লিগ কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে লিভারপুল। লন্ডনের ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য ড্র থাকার পর ভাগ্য নির্ধারণের জন্য টাইব্রেকারের প্রয়োজন হয়। সেখানেই একে একে ১০টি করে শট নিয়ে উভয় দলই সফল হবার পর ১১তম শটে এসে লিভারপুলের গোলরক্ষক কাওমিহিন কেলেহার গোল করতে সক্ষম হলেও চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা নিজের শটটি মিস করেন। কেপার শটটি বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ২০১২ সালের লিগ কাপের পর এই প্রথম ঘরোয়া কোন নকআউট ম্যাচের শিরোপার জয় করলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। এর আগে পেনাল্টি রক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত কেপাকে অতিরিক্ত সময়ের পর এডুয়ার্ড মেন্ডির স্থানে নামানো হয়েছিল। কিন্তু লিভারপুলের একটি শটও আটকাতে পারেননি এই স্প্যানিয়ার্ড।
নির্ধারিত ১২০ মিনিট পর্যন্ত কোন গোল হয়নি। পুরো ম্যাচেই উভয় দলই বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছে। দ্বিতীয়ার্ধে জোয়েল মাটিপের গোল বিতর্কিত ভাবে অফসাইডের কারনে বাতিল করা হলে হতাশ হতে হয় লিভারপুলকে। চেলসির তিনটি গোলও অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার সিটিকে পিছনে ফেলে এ নিয়ে রেডসরা রেকর্ড নয়বার লিগ কাপের শিরোপা ঘরে তুললো। দুইবার ব্যর্থ হবার পর প্রথম জার্মান ম্যানেজার হিসেবে শেষ পর্যন্ত ওয়েম্বলিতে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন ক্লপ। প্রিমিয়ার লিগেও ম্যানচেস্টার সিটির থেকে ছয় পয়েন্ট দুরে থাকা লিভারপুল শিরোপা দৌড়ে নিজেদের ভালভাবেই টিকিয়ে রেখেছে। আর এসবই লিভারপুলকে কোয়াড্রাপল শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর করে তুলেছে। ইন্টার মিলানকে শেষ ১৬’র প্রথম লেগে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের পথেও এগিয়ে রয়েছে লিভারপুল। বুধবার এফএ কাপের পঞ্চম রাউন্ডে তাদের প্রতিপক্ষ নরউইচ।
ম্যাচের শুরুতেই উভয় দল ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে। চেলসি ও লিভারপুলের অধিনাক সিজার আজপিলিকুয়েটা ও জর্ডান হেন্ডারসন ইউক্রেনের সমর্থনে হলুদ ও নীল ফুল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেছিলেন।
চেলসির জন্য মাঠ ও মাঠের বাইরে পুরো সপ্তাহটা বেশ অস্বস্তির ছিল। ইউক্রেন ইস্যুতে ক্লাবের রাশিয়ান মালিক রোমান আব্রামোভিচ শনিবার দাতব্য ফাউন্ডেশনের কাছে মালিকানা হস্তান্তর করেছেন। যদিও তিনি এখনো চেলসির মালিক রয়েছেন। এখন চেলসির সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ধরে রাখা ও লিগে শেষ চারে থেকে মৌসুম শেষ করাই মূল লক্ষ্য। রোববার শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমনের মাধ্যমে ম্যাচে গতি বেড়েছে। ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ ম্যাচের শুরুতেই কেলেহারের হাতে সরাসরি বল জমা দেন। নেবি কেইটার ২০ গজ দুরের শট মেন্ডি সহজেই রুখে দেন। সাদিও মানের শট একহাতে কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন মেন্ডি। বিরতির ঠিক আগে পুলিসিচের কাছ থেকে বল পেয়ে হাভার্টজ ম্যাসন মাউন্টের কাছে বাড়িয়ে দেন। কিন্তু আট গজ দুর থেকে মাউন্টের ভলি পোস্টের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাউন্ট ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন। ৬৭ মিনিটে মাটিপের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল লিভারপুল। কিন্তু ভার্জিল ফন ডাইকের অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর হাভার্টজের হেডের গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। ৭৪ মিনিটে বদলি বেঞ্চ থেকে মাঠে নামেন রোমেলু লুকাকু। অতিরিক্ত সময়ে তার গোলে আবারো জয়ের আনন্দ খুঁজে পায় চেলসি। কিন্তু তার দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ের গোলটিও শেষ পর্যন্ত অফসাইডের খরায় সফলতার মুখ দেখেনি। শেষভাগে হাভার্টজের আরো একটি গোল আবারো অফসাইডের পতাকার কারনে বাতিল হয়ে গেলে হতাশ হতে হয় চেলসিকে।