নিজস্ব প্রতিবেদক »
সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান শেষে প্রশাসনের উপর হামলা চালিয়েছে অবৈধ দখলদাররা। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে তিন হামলাকারীকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূলের ২ নম্বর সমাজের বড়ইতলা এলাকায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, র্যাব, এপিবিএন, পুলিশ ও আনসারের ২৫০ সদস্যের অংশগ্রহণে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, অভিযানের শেষ পর্যায়ে বিকেলে চারটার দিকে হঠাৎ কয়েকশ নারী-পুরুষ পাহাড়ের চূড়ায় ওঠে অভিযানে থাকা সকলের উপর অতর্কিতভাবে বৃষ্টির মত পাথর ছুঁড়তে থাকে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকু- থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘অভিযান শেষ করে ফেরার পথে হঠাৎ কয়েকশো নারী-পুরুষ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে অতর্কিত পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে আমিসহ আরও কয়েকজন আহত হন। অতর্কিত ছোঁড়া পাথর আমাদের শরীরে এসে পড়ে। আহতরা ভাটিয়ারীর বিএসবিএ হাসপাতাল ও সীতাকু- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’
সীতাকু- উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘অভিযান শেষে ফেরার পথে অতর্কিতভাবে পাহাড়ের আড়াল থেকে কয়েকজন নারী-পুরুষ পাথর ছুঁড়তে থাকে। এতে ইউএনওসহ কয়েকজন আহত হন।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূলের ২ নম্বর সমাজের বড়ইতলা এলাকায় ৩৬০ ও ৩৬১ দাগের খাস জায়গাগুলোতে দীর্ঘদিন কিছু মানুষ অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করে বসবাস কওে আসছিল। তাদেরকে প্রায় ১ মাস আগেই উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। উদ্ধারকৃত এ জায়গায় পাহাড়ি পরিবেশ ঠিক রেখে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসব খাস পাহাড়ি জমি কেটে একদল ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী অবৈধ বসতি স্থাপন করেছে। আজকের অভিযানে অবৈধ দখলে থাকা প্রায় ১০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এখানে আর কোনও অবৈধ স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না। তবে বৈধভাবে থাকা কেউ যদি উচ্ছেদ হয় তার তালিকা করে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। পুরো জঙ্গল সলিমপুরকে ঘিরে সরকার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যেটুকু পাহাড় কাটা হয়েছে তাতেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। বাকি পাহাড়ের পরিবেশ-প্রতিবেশ অক্ষুণ্ন রাখা হবে।’
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নু-এমং মারমা, মো. রাজিব হোসেন, এস এম এন জামিউল হিকমা, রাকিবুল ইসলাম এবং সীতাকু- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন। এ ছাড়া অংশ নেয় শতাধিক পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাব এবং সীতাকু- ফায়ার সার্ভিস টিম ও বিদ্যুৎ বিভাগের টিম।