সুপ্রভাত ডেস্ক »
রেষারেষি তো দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এবার চরমে উঠল আফগানিস্তানে অভ্যন্তরীণ তালেবানি সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদর এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের দ্বন্দ্ব। ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেক্টেটরে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ওই ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোল্লা বারাদারকে জিম্মি করে রাখা হযেছে। তালেবানি নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মৃত্যু হয়েছে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল পতনের পর থেকেই ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে তালেবান এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের । তারইমধ্যে সোমবার ব্রিটিশ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে চলতি মাসের গোড়ার দিকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল বারাদার গোষ্ঠী এবং হাক্কানি গোষ্ঠী। হক্কানি নেটওয়ার্কের পক্ষে আছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। যাতে পাকিস্তানের বিশ্বস্ত লোকেদের হাতে তালেবানি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ যায়।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে হাক্কানি এবং বারাদারের মধ্যে এক সংঘর্ষের কথাও সংবাদমাধ্যমটি উল্লেখ করেছে। সেদিন কাবুলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে সরকার গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আফগানিস্তানের মন্ত্রী খলিলুর রহমান হাক্কানি নিজের চেয়ার ছেড়ে বারাদারের দিকে তেড়ে যান এবং তার মুখে ঘুষি মেরে বসেন।
বারাদার একটি ‘সর্বব্যাপী’ মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন; যেখানে তালেবানের বাইরেও নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা বহিঃবিশ্বের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য হবে।
সংঘর্ষের পর তিনি সাময়িকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান এবং পরে কান্দাহারে আত্মপ্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাকে সমর্থনকারী আফগানিস্তানের উপজাতীয় নেতাদের সাথে একটি বৈঠক করেন এবং তালেবান নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করতে বাধ্য হন।
দ্য স্পেকটেটরের ভাষ্যে, সে ভিডিও বার্তাটি দেখে মনে হয়েছে, বারাদারকে জিম্মি করা হয়েছে (হোস্টেজ ভিডিও)।
এদিকে আখুন্দজাদা কোথায় আছেন তা এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। তারা লিখেছে, “তাকে দীর্ঘ একটা সময় দেখা বা তার কাছ থেকে কিছু শোনা যায়নি এবং গুজব রয়েছে তিনি মারা গেছেন”।
দলটির শীর্ষস্থানে এই শূন্যতা তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে- যা তাদের দুই দশক আগের শাসনকালে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, তালেবান এবং হাক্কানি গোষ্ঠী ২০১৬ সালের দিকে একীভূত হয়।
মোল্লা আবদুল গনি বারাদার এবং দোহা আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্টরা তালেবানের একটি মধ্যপন্থী ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করছিল, কিন্তু হাক্কানি নেটওয়ার্ক সমর্থকেরা আত্মঘাতী হামলার প্রশংসা করেছে।
আফগানিস্তানের শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল হাক্কানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন।
অন্যদিকে, হাক্কানিরা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট; এমনটি তাদের নামটিও ইসলামাবাদের নিকটে দারুল উলুম হাক্কানিয়া মাদ্রাসা থেকেই নেয়া।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস