আলমগীর শিপন
পৌষ পার্বণের পিঠে খেতে বসে কত না গল্প হতো
সেই দিনকার মুখোমুখি যারা তারাই বুঝবে শত
আজ-কালকার ছেলেপুলেদের জীবন ঠুনকো আঁটি
এ সব শুনলে ভাবে কত ওরা মধুরতা ছিল খাঁটি।
দইওয়ালা যেত মেঠোপথ ধরে হাঁকিয়ে গলার স্বর
সিকিটা পকেটে ঝনঝঝনাতো মাতাতো পর পর।
রোদশুকানো ধানে জিলাপি পেতাম আরো পেতাম কটকটি
বড়দের চোখ ফঁকি দিয়ে মোরা খেয়ে নিতাম ওসব ক’টি।
ইঁদুরের গর্তে সাত গোলা ধান ভরা ছিল সাজে সাজে
দুষ্ট ছেলেরা দল বেঁধে গিয়ে তুলে নিত তাদের কাজে।
ফুটবল খেলে সাঁজবেলাতে ফিরতো বোঝা মাথায়
অংক স্যারের অংকের ফল মিলবে তো কাল খাতায়?
কিষানীর মনে কতই না শান্তি সুখেরা কিলবিল করে
মায়া-মমতায় ঘেরা বাগানে হিংসারা আসেনি পরে।
এ পাড়ার কালু ও পাড়ার দুলাল সবাইতো ছিল ভাই ভাই!
আজ দেখি সব ভেদাবেধে ভরা, ওরা দেখেও দেখে না তাই।
ভোরবিহানে পাড়ার মক্তব জেগে উঠতো মৌলভীর হাঁকে
আরবি পড়ার সুমধুর টানে মন মাতাতো গাঁয়ের বাঁকে।
ছেলেমেয়ে সব এক কাতারে বসে গাইতো পল্লীগান
বিয়েবাড়িতে কলাপাতার গেইটে বইতো আনন্দের বান।
সেই সব দিন মনে করে আজও ভাসি স্মৃতিমাখা কল্পনায়
আজকের দিনের খোকাখুকুরা ও সব ভাবেও না জল্পনায়।
আমরা ছিলাম সোনালী যুগের সোনামুখি দামাল ছেলে
তোমরা এখনো একবারও ভাবো না আসলে কী পেলে!