সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
দুঃস্বপ্নের প্রথম সেশন। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়। নড়েচড়ে বসার আগেই নেই ৪ উইকেট। এরপরের সময়টা কাটল স্বপ্নের মতো। মোহনীয় ব্যাটিংয়ে নরম রোদে মাখা দিনটা বুলিয়ে দিল স্বস্তির পরশ। সাম্প্রতিক সময়ে নানা ঘটনায় যে দুজন ব্যাটসম্যান ছিলেন সবচেয়ে অস্বস্তিতে সেই লিটন দাস, মুশফিকুর রহিমের হাত ধরেই এলো দুর্দান্ত এক দিন।
মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের ঝলকে দ্বিতীয় সেশনে খাদের কিনার থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের শুরু আর শেষে কোন মিল নেই। লাঞ্চের আগেই ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ বাকি দিনে আর একটি উইকেটও হারায়নি। দিনশেষে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ২৫৩।
টি-টোয়েন্টিতে বিপর্যস্ত সময়ের ধকল লিটন প্রভাব পড়তে দেননি তার টেস্ট পারফরম্যান্সে। টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করে তিনি অপরাজিত থাকেন ১১৩ রানে। সঙ্গী মুশফিকুর রহিমের রান ৮২। দ্বিতীয় দিনে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় তিনিও। পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটিতে এসে গেছে ২০৪ রান।
টস জিতে ব্যাট করার জন্য বেশ আদর্শ উইকেটে সহজেই ব্যাটিং বেছে নেন মুমিনুল হক। যেকোনো উইকেটের সকালের দিকে পেসাররা পান একটু সুবিধা। বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান সেই সময়টাই পার করতে পারেননি।
শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভারেই ফিরতে পারতেন সাদমান। বল তার ব্যাটে লেগে কিপারের হাতে গেলেও আবেদন করেনি পাকিস্তান। পরে এলবিডব্লিউ থেকেও রিভিউ না নেওয়ায় বেঁচে যান তিনি। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। হাসান আলির বলে ফেরেন ১৪ রান। তার আগেই ওই ১৪ রান করেই শাহীনের শিকার হয়ে ফেরত যান সাইফ।
অধিনায়ক মুমিনুল থিতু হওয়ার আগেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান।
নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছিলেন সাবলীলভাবে। তবে ফাহিম আশরাফের মিডিয়াম পেসে তার আউটটা খুব পীড়াদায়ক।
৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানো দল তখন পায়ের নিচে মাটি খুঁজতে হয়রান। ক্রিজে এসে কঠিন পরিস্থিতি সহজ করার কাজ হাতে নেন লিটন-মুশফিক। লিটন মন দেন রান বাড়ানোয়, মুশফিক শাহীনদের ছোবল সামলান দক্ষ হাতে।
৬৯ রান নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে দুজনের ব্যাট যেন আরও চওড়া। শাহীনের দ্বিতীয় স্পেল সামলান অনায়াসে। স্পিনারদের থিতু হতে দেননি। একটু আলগা বল পেলেই রান বের করেছেন তারা। ৯৫ বলে ৬ চার, ক্রিজ থেকে বেরিয়ে মারা একটি ছক্কায় ফিফটি তুলেন লিটন।
টেস্টে দশম ফিফটিটা টেনে তিন অঙ্কে নেওয়ার দাবি ছিল তার সামনে। দলের সে চাওয়া লিটন পূরণ করেছেন পরিণত মাথায়। এক পর্যায়ে ৭০ এর ঘরে লিটন-মুশফিক ছিলেন সমান তালে। এরপর লিটন দ্রুত তার রান বাড়িয়ে নেন। ১৯৯ বলে ১০ চারে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। ব্যাট উঁচিয়ে জানান দেন তার সামর্থ্যের ছবি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
বাংলাদেশ: ৮৫ ওভারে ২৫৩/৪ ( সাদমান ১৪, সাইফ ১৪, শান্ত ১৪, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৮২* , লিটন ১১৩* ; শাহীন ০/৫০ , হাসান ১/৩৮, ফাহিম ১/৩৮, সাজিদ ১/৬৮ , নোমান ০/৫১)