নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নগরবাসীর পরামর্শে ও সহযোগিতায় বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন সুধী সমাবেশে। শপথ গ্রহণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যভার গ্রহণের আগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতা, নগরের সুধীজনদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি মশক নিধন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নগরবাসীকে উন্নত সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। নগরের উন্নয়নে তিনি মন্ত্রী, সাংসদ অন্যান্য সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের সাথে পরামর্শক্রমে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবেন বলে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেন। মতবিনিময় সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সন্ত্রাস ও খুনখারাবিমুক্ত পরিচ্ছন্ন নগর দেখতে চান বলে আশা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম মহানগরী বিশ্বের ক্রমবর্ধমান বিকশিত নগরীর একটি, দেশিÑবিদেশি বিনিয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম মিলে বেশ কিছু বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। সুতরাং চট্টগ্রাম মহানগরের পরিকল্পিত উন্নয়ন, এটির প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব রূপ অক্ষুণœ রাখা দেশের স্বার্থেই প্রয়োজন। চট্টগ্রাম মহানগরীর জনগণের অভিভাবক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে তিনি এই নগরীকে বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলবেন এবং নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা প্রদানে তিনি আন্তরিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করবেন এটি নগরবাসী আশা করে। নগরীর নালা ও খাল থেকে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার প্রতিশ্রুতি প্রশংসনীয়। নগরীর খালগুলি উদ্ধার করতে পারলে নগরীর চারপাশে নৌপথে চলাচল সহজ হবে। পরিবেশ দূষণ, রাস্তাঘাট সংস্কার, ফুটপাতে অবৈধ দখল পরিহার করা গেলে নগরজীবন কিছুটা স্বস্তিময় হবে। কিশোর তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নগরীতে খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করা গেলে নগরবাসী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
কর্ণফুলী টানেল এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে কর্ণফুলীর এপারে-ওপারে শহর বিস্তৃত হব্ েতাই এখন থেকে কর্ণফুলীর উভয় তীরে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে। নগরীর অধিকাংশ ওয়ার্ডে নাগরিক সুযোগ সুবিধা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অপ্রতুল, এগুলিতে মফস্বলীয় ছাপ বিদ্যমান। নগর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি অনেক ওয়ার্ডে। আমরা চাই নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য পৃথক পৃথক প্ল্যান; প্রয়োজন সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান। সকল সেবা সংস্থা যাতে নগরবাসীদের যথাযথ সেবা প্রদান ও নানাবিধ দুর্ভোগ পরিহারে চসিক এর সাথে সমন্বিত কার্যক্রম নিতে পারে সে লক্ষ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে চসিক এর ক্ষমতা ও কাজের পরিধি বাড়াতে হবে বলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন।
চট্টগ্রাম দেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক নগরী, প্রায় ৮শ বছর বয়স এই নগরীর, ঢাকা ও কোলকাতার চাইতেও প্রাচীন, এর জনবৈচিত্র্যও আকর্ষণীয়। একদা চট্টগ্রামকে বলা হতো প্রাচ্যের রাণী। পাহাড়, নদী, সমুদ্র, অরণ্যানী মিলে চট্টগ্রামের যে প্রকৃতিÑপরিবেশ তা দেশের অন্য কোথাও নেই। চট্টগ্রামের এই ঐতিহাসিক পরিবেশবান্ধব ঐতিহ্য রক্ষা করতে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে।
মতামত সম্পাদকীয়