নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি একটি কন্টেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে চৌদ্দ জন হয়েছে; দগ্ধ ও আহত শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রয়েছেন।
নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপোতে শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রনে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিট সারারাত কাজ করেছে।
শুরুতে ডিপোর কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরপর স্থানীয় কুমিরা স্টেশনের দুটি ইউনিটের গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু পরে রাসায়নিকের একটি কন্টেইনারে আগুন লাগার পর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান।
স্থানীয়রা বলছেন, ডিপো থেকে তিন কিলোমিটার দূরের বাসিন্দারাও বিকট শব্দে বিস্ফোরণ শুনতে পান। আশেপাশের এলাকায় অনেক বাড়িঘরের কাঁচ ভেঙে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশন থেকে সব গাড়ি রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়। এরপর রাত বাড়ার সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর সব স্টেশনের সব গাড়িই সেই ডিপোতে আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত হয়।
এরপর পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ওই ডিপোতে জড়ো হয়।
বিএম কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার কারণ সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি। ডিপোর এক কর্মকর্তা জানান, রাতের পালায় তাদের নিজস্ব দু’শর মত কর্মী ডিপোতে কাজ করেন। এরসঙ্গে আরও যুক্ত থাকেন কয়েকশ ট্রাক ও কভার্ডভ্যানের চালক, সহকারী ও শ্রমিকরা।
প্রায় ২৪ একর জমির উপর ওই ডিপোটি অবস্থিত। সেখানে কয়েক হাজার কন্টেইনার ছিল।
ঘটনার পরপরই হতাহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুজনের মৃত্যু কথা জানা যায় হাসপাতাল সূত্রে। আহত ৭০ থেকে ৮০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর।
পরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে আট জনে দাঁড়ায়। এদের মধ্যে সাত জনের লাশ চমেকের লাশ ঘরে রাখা হয়েছে। অপর লাশটি রাখা হয়েছে পাঁচলাইশের পার্ক ভিউ হাসপাতালে।
এদিকে রোববার সকালে সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর ভেতর থেকে ছয় জনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে তাদের নাম–পরিচয় কিছু জানা যায়নি। লাশগুলো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।