নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হবে ৩১ জানুয়ারি। ওইদিন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল এ রায় ঘোষণা করবেন।
গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চতুর্থ দিনের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে আসামি ওসি প্রদীপের আইনজীবীর অসমাপ্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের মধ্যদিয়ে চতুর্থ দিনের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। শেষ হয় বেলা ১২টার দিকে।
জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় প্রিজন ভ্যানে করে মামলার ১৫ আসামিকে কক্সবাজার কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
মামলার বিচারিক কার্যক্রমে ৮ দফায় গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৩ জন সাক্ষির মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাদের জেরা শেষ হয়েছে। সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শেষ হওয়ার পর কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আসামিদের বক্তব্য গ্রহণ করেছিল আদালত। একই সাথে ৯ জানুয়ারি রোববার থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তি-তর্কের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান।
এ ঘটনার পাঁচদিন পর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদি হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
আদালতে ওসি প্রদীপের নির্দোষ দাবি
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার সময় নিজেকে ফের নির্দোষ দাবি করেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ। তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমি কিছু করিনি। গুলি করেছে লিয়াকত আলী। হত্যার জন্য সেই দায়ী। আমার দিকে একটু সদয় হোন।’ এর আগেও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। তবে তখন কাউকে ঘটনার জন্য দায়ী করেননি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলমসহ একাধিক আইনজীবী।
ফরিদুল আলম বলেন, ‘রায় ঘোষণার আগে ওসি প্রদীপ বিচারকের কাছে পাঁচ মিনিট সময় চান। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ ও লিয়াকতকে দোষী দাবি করেন। বিচারক তখন তাকে বলেন, আপনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেননি কেন? এসব তো তখন বলতে পারতেন।’ এখন মামলা রায়ের পর্যায়ে। এখন এসব কেন বলছেন?’
প্রসঙ্গত, লিয়াকত বাহারছাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। এই ফাঁড়ির শামলাপুর চেকপোস্টে মেজর সিনহা নিহত হন পুলিশের গুলিতে।