নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম নগরের ‘ফুসফুস’ সিআরবি রক্ষায় সামাজিক আন্দোলন দিনে দিনে জোরদার হচ্ছে। আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ উদ্যাগের প্রতিবাদ জানায়।
গতকাল বিকেল ৪টায় সিআরবির সাতরাস্তা মোড়ে ‘সিআরবির প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচতে হবে’ শিরোনামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম। একই সময়ে সিআরবি চত্বরে প্রকৃতিবাদী সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক স্কোয়াড।
সমাবেশে কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ‘সিআরবিতে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হয় এমন স্থাপনা এখানে নির্মাণ সমীচীন হবে না।’
তিনিবলেন, ‘পিপিপির ভিত্তিতে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। যারা হাসপাতাল করবেন তারা নিশ্চয়ই ব্যাংক থেকে টাকা নেবেন। এসব টাকাতো পাবলিকের টাকা। আর পাবলিকের টাকা দিয়ে পাবলিকের শহরের সৌন্দর্য হানি করা হবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের কেন্দ্র ছিল ডিসি হিল। কিন্তু হঠাৎ সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই সিআরবি রক্ষা আন্দোলনের সাথে ডিসি হিল রক্ষার আন্দোলনও যুক্ত করা হবে।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, পরিবেশবিদ ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব কাজী মহসিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. ইউনুস, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান, মিলি চৌধুরীসহ আরো অনেকে।
একই স্থানেসকাল এগারোটায় মানববন্ধন করেনশিশু কিশোর মেলা ও বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র। বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতিবাদ ও ক্ষোভকে উপেক্ষা করে সরকার ও রেল কর্তৃপক্ষ সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল ও কলেজ নির্মাণর করতে চায় যা জনস্বার্থ বিরোধী।
দুপুর দুইটায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ স্বরূপ বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। দুপুরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন. সিআরবি এলাকাটি রেলওয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা। এটি ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্য শৈলীর একটি অনবদ্য নিদর্শন এবং বলা হয়ে থাকে এটিই চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রাচীনতম সুশীতল এলাকা। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মধ্যে বহুতল হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের মত স্থাপনা নির্মাণ বাসযোগ্য পরিবেশ বিনষ্ট করবে। সিআরবি’র এই মহামূল্যবান জমি কী করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হলো তা বোধগম্য নয়। সিআরবিতে এই জমি বরাদ্দ দেওয়ায় রেলের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি।
অন্যদিকে বিকাল পাচঁটায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, পরিবেশ বৃক্ষণ, আমরা চট্টগ্রামবাসী, বাংলাদেশ মানবিধার ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন।