সুপ্রভাত ডেস্ক »
সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম চালানোর জন্য গত অর্থবছরের তুলনায় আসন্ন অর্থবছরে ৯ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, মা ও শিশু বিভাগে সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষায় হিজরা সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা ছিল। প্রায় ৯৩ শতাংশের অধিক ভাতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক হিসাবে ‘গভর্নমেন্ট টু পার্সন’ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ভাতা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ১ কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৭ জনকে ‘গভর্নমেন্ট টু পার্সন’ পদ্ধতিতে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দেশব্যাপী প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। শনাক্তকৃত প্রায় ৩৩ দশমিক ৩৪ লাখ প্রতিবন্ধীর তথ্য সংবলিত ডিএজাবিলিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামে নতুন সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশব্যাপী বেসরকারি এতিমখানা/ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি স্মার্ট সিস্টেম (জি২১) পদ্ধতিতে ইএফটির মাধ্যমে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রদান করা হবে।
জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (ছবি: ফোকাস বাংলা)
আগামী অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৩৪ হাজার বাড়ানো হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্তের সংখ্যা বর্তমান ২৯ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার জনে উন্নীত করা হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের উপবৃত্তির হার বিদ্যমান ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৫০ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে মা ও শিশুদের সহায়তা কার্যক্রমে আগামী অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৮০ জনে বাড়ানো হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। এর আওতায় ভাতা ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৫০ টাকা করা হবে।
সরকার প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। তাই আগামী অর্থবছরে ভাতাপ্রাপ্ত প্রবীণের সংখ্যা ২ লাখ বাড়ানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে ভাতাপ্রাপ্ত প্রবীণের সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০ লাখ ১ হাজার জনে উন্নীত করা হবে এবং প্রবীণদের জন্য মাসিক ৬০০ টাকা হারে ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ভাতাপ্রাপ্ত বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীর সংখ্যা বিদ্যমান ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জন থেকে বাড়িয়ে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বাবদ ১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে আগামী অর্থবছরে সামাজিক সুরক্ষায় হিজড়াদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৮৮০ জনকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট ১২ হাজার ৬২৯ জনকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এছাড়া, বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। আগামী অর্থবছরে সমাজের অনগ্রসর অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ৯০ হাজার ৮৩২ জনকে ভাতার আওতায় আনা হবে। হিজড়া, বেদেসহ সব অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি চলমান থাকবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি বাজেটে।