নগর আওয়ামী যুবলীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক »
ব্যানার-পোস্টার জানান দিচ্ছে নগরীতে যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে। পাঁচলাইশের কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে আগামী সোমবার ত্রি বার্ষিক এই সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। নগর যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে পুরো নগরী পোস্টারে ছেয়ে গেছে। সড়কের উভয় পাশ, রোড ডিভাইডার ও রাস্তার পাশের ভবন। সব খানেই পোস্টার ও ব্যানার।
ব্যানার পোষ্টারের আধিক্য দেখা যাচ্ছে নগরীর একমাত্র পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লু বে ভিউকে কেন্দ্র করে। ইস্পাহানি মোড় থেকে কাজীর দেউরি মোড় হয়ে এস এস খালেদ রোডটি যেনো ব্যানার পোস্টারে ঢেকে গেছে।
শুধু পোস্টার ই নয়। নগরীর পাঁচ তারকা হোটেলে যুবলীগের নেতাকর্মীদের টানা অবস্থান এবং প্রবেশ মুখে ব্যানার পোস্টারের কারণে হোটেলের স্বাভাবিক পরিবেশ যেমন রক্ষা করা যাচ্ছে না তেমনি এই জঞ্জালে নগর হারিয়েছে সৌন্দর্য। শুধু হোটেল র্যাডিসন এলাকা নয়, পুরো নগরী ব্যানার পোস্টারে আবৃত হয়ে নগরবাসীর মহাবিরক্তির কারণ হয়ে দাড়িঁয়েছে।
যে কমিটির জন্য এতো আয়োজন, সেই আলোচিত কমিটি কি আদৌ সম্মেলনের শেষে প্রকাশ হবে? এর আগে ঘটা করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন করা হলেও কমিটির ঘোষণা এসেছে অনেক পরে। এবিষয়ে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু বলেন,‘ ২০২১ সালের ১৯ জুন আমাদের সম্মেলন করা হলেও কমিটির ঘোষণা আসে প্রায় ১০ মাস পর গত ৯ মার্চে।’
যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমিটি নিয়ে নাছির ও নওফেল এই দুপক্ষের অনুসারীরাই প্রবলভাবে সক্রিয়। সভাপতি ও সম্পাদক পদে উভয়েই চাইছে তাদের অনুগতদের রাখতে। বিরোধ এড়াতে সম্মেলনে কমিটির ঘোষণা নাও আসতে পারে। ঘোষণা কেন্দ্র থেকে আসার সম্ভাবনাই বেশি। সম্প্রতি শেষ হওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা একটি উদাহরণ।
কারা আসতে পারে নতুন কমিটিতে? এই প্রশ্নের উত্তর কেউ বলতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তরুণ ও মাঠের অনেক নেতা-কর্মীর নাম উঠে আসছে। তবে এই কমিটিতে বর্তমান কমিটির আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, দুই যুগ্ম আহবায়ক ( দেলোয়ার হোসেন খোকা ও ফরিদ মাহমুদ ) যুবলীগে না থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার ঘোষণা দেয়ায় নতুন নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ হয়েছে। এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন খোকা বলেন,‘ নতুন কমিটিতে কারা আসছে তা অগ্রিম বলার কোনো সুযোগ নেই। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি তা নির্বাচন করবেন। তবে আমরা তিনজন (মহিউদ্দিন বাচ্চু, দেলোয়ার হোসেন খোকা ও ফরিদ মাহমুদ) যুবলীগের রাজনীতি আর করব না। আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে আগ্রহী। আমরা তরুনদের জন্য এই জায়গাটি ছেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
১০১ জনের কমিটির জন্য আবেদন পড়েছে ১৬০৮
যুবলীগের ১০১ সদস্যের কমিটির জন্য আবেদন করেছে ১৬০৮ জন। এরমধ্যে সভাপতি পদে ২৭ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮১ জন জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কাদের নাম আলোচনায় বেশি? নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যুবলীগের বর্তমান কমিটির যেমন অনেকে রয়েছেন আবার ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির অনেকেও যুবলীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। সবাই চায় কমিটিতে নিজের নাম লেখাতে। এবিষয়ে কথা হয় সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়া হাবিবুর রহমান তারেকের সাথে। তিনি বলেন,‘ আমরা চাই মাঠের পরীক্ষিত নেতা কর্মীদের নেতৃত্বে আনা হউক। কোনো হাইব্রিড যাতে নেতৃত্বে আসতে না পারে।’
অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি হিসেবে আলোচনায় থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহবায়ক দিদারুল আলম দিদার (সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের সন্তান) ও মাহবুবুল হক সুমন। এছাড়া রয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম এবং এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চুসহ প্রমুখ। অপরদিকে সেক্রেটারি পদে আলোচনায় আছেন নগর ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, দেবাশীষ পাল দেবু, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব প্রমুখ। তবে এসব বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।