সব পক্ষই সন্তুষ্ট!

সুপ্রভাত রিপোর্ট »

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চমক হলো স্বতন্ত্র প্রার্থী। যাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের।
জানা যায়, নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দলেরও তাতে আপত্তি ছিল না। দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটল।
সর্বশেষ ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগ রোববার দিবাগত রাত পৌনে দেড়টা পর্যন্ত ২২৩ আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া, জাতীয় পার্টি ১১ ও স্বতন্ত্র থেকে ৬১ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
এ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি। এরপর থেকে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে কোনো দল যদি ১৫১ আসনে বিজয়ী হয় তাহলে তারা সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আগামী সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এবারো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠন করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দশম-একাদশের ধারাবাহিকতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এবারও নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ৩৬টি দল।
নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশের মতো: সিইসি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচনে ‘৪০ শতাংশের মতো’ ভোট পড়েছে দাবি করে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। সরকারের যে উইল ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের, সেদিক থেকে সরকারের তরফ থেকে আন্তরিকতা ছিল, সহযোগিতা ছিল। সেই সহযোগিতা পেয়েছি বলেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। তবে আমি বলছি না নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
রোববার ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনে সিইসি এসব কথা বলেন। ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিবসহ অন্য কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশের মতো। কিছুটা ব্যত্যয় হতে পারে। এটা বাড়বে কি কমবে এখন বলতে পারছি না। আরও বাড়তে পারে। আবার নাও বাড়তে পারে। আমি ঠিক বুঝি না। মোটামুটি আমাদের যে শঙ্কা ছিল, ভোটার উপস্থিতি আরও কম হবে। নির্বাচন বর্জন করে পরোক্ষভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা হবে। আমরা দেখেছি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন ভোটাররা। কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্র দখল করে সিল মারা হয়েছে। কিছু ব্যালটে সিল মারা দেখা গেছে। কিন্তু তার পেছনে কোনও সই নেই। এগুলো গণনা থেকে বাদ দেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করেছি।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় এক ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানিয়েছিলেন, ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত মোট ভোট পড়েছে ২৭ শতাংশ। সিইসি বলেন, ২৯৯ আসনে নির্বাচন হয়েছে। আমরা ইসি থেকে সারাক্ষণ খোঁজ-খবর রেখেছিলাম। আমি কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরেছি। আমার সহকর্মীরাও ঘুরেছে। আমরা যেগুলো দেখেছি, পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল। আমরা পরে টিভিতে দেখেছি। সহিংসতার ঘটনা গুরুতর কিছু ঘটেনি। কিছু আসনে হয়েছে। এজন্য কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করতে হয়েছে। একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি বিষয় স্বস্তিদায়ক, নির্বাচনি সহিংসতায় কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। কিছু আহত হতে পারে। তবে কিছু জায়গায় অনিয়ম হয়েছে। কিছু জায়গায় সিল মারা হয়েছে। কিছু ফলস নিউজও এসেছিল। ক্রস চেক করে নিশ্চিত হওয়ার পর রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে টিভিগুলোর মালিক প্রার্থী নন তার ওপর আমরা বেশি নির্ভর করেছি। তারা অধিকতর বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়েছে। তাদের ওপর আস্থা রেখেছি। স্বচ্ছতা দৃশ্যমান। আমি দেখেছি। ভোট ভালো হয়েছে। আমি নেগেটিভ খবর খুঁজছিলাম। খুব বেশি কেউ মারামারি কাটাকাটির কথা বলেনি। আমরা আহত-নিহত কামনা করি না।

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে: মার্কিন পর্যবেক্ষক দল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন পর্যবেক্ষক দল। রোববার ভোটগ্রহণ পরিদর্শন শেষে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে পর্যবেক্ষক দল এ কথা জানায়।
সাবেক মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম বেটস বলেন, ‘আমি যেটি দেখেছি সেটি হচ্ছে- নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।’
বাংলাদেশে ভোটগ্রহণের সময় বিশ্বে সবচেয়ে কম।’ বিশ্বের অন্য কোনও দেশে আট ঘণ্টা ভোট হয় না বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ‘আমি অবশ্যই বলতে চাই, আমার দেশের মিডিয়া বাংলাদেশের মিডিয়ার মতো অনুসন্ধানী ও সৎ নয়। এখানকার গণমাধ্যম যেটি বাস্তবে হয় সেটির বিষয়ে তারা রিপোর্ট করে।’
আরেকজন মার্কিন পর্যবেক্ষক আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস-এর প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার বি গ্রে বলেন, ‘আমি নিজের চোখে যা দেখেছি সেটি হচ্ছে- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করা হয়েছে। ভোটাররা উৎসাহের সঙ্গে কেন্দ্রে গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার সঙ্গী প্রক্রিয়াটি দেখেছি। আমরা প্রায় ১০টি সেন্টার ঘুরে দেখেছি। আমরা সন্তুষ্ট যে নির্বাচন অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সঙ্গে পরিচালনা করা হয়েছে।’
নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে, বললো রাশিয়ার পর্যবেক্ষক দল
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার অ্যান্দ্রে ওয়াই শুটব। রোববার হোটেল সোনারগাঁতে দিনভর ভোট পর্যবেক্ষণের পর সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতা জানান রাশিয়ার কর্মকর্তা। নির্বাচনের আয়োজন চমৎকার ছিল জানিয়ে রাশিয়ার নির্বাচন কমিশনার জানান, তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে হয়েছে। সামগ্রিকভাবে ভোটের নিরাপত্তা ভালো ছিল এবং সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে খবর সংগ্রহ করতে পেরেছে বলেও জানান তিনি। কিছু দেশ বাংলাদেশে অস্থিতিশীল অবস্থা দেখতে চায়- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অ্যান্দ্রে ওয়াই শুটব বলেন, সাধারণভাবে বলতে চাই আমরা এক সন্ধিক্ষণে আছি যখন এক মেরু থেকে বহু মেরুকরণ বিশ্বে উত্তরণ ঘটতে চলেছে। বাংলাদেশের ওপর যেকোনও সিদ্ধান্ত বিশ্ব চাপিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র, স্বাধীন নীতি গ্রহণ করবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে শেখ হাসিনা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন : ওবায়দুল কাদের
স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কিভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় তা শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কিভাবে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হয়। আর সকলে তা প্রত্যক্ষ করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
ওবায়দুল কাদের গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী দলের প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসস।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘জনগণের বিজয়’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি যাদের কাছে কৃতজ্ঞ তারা হলেন বাংলাদেশের জনগণ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ, বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে জনগণের বিজয়।
তিনি বলেন, জনগণ তাদের পছন্দ মতো প্রার্থীদেরকে ভোট দিয়েছে। ভোট প্রদানে কোনও প্রকার ভয়-ভীতি বা হস্তক্ষেপ হয়নি। এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে শক্তিশালী করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের আন্তর্জাতিক বন্ধুদের তারা বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল।
বিএনপির ভোট বর্জনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের বর্জন করেছে। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। হরতাল-অবরোধ দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি গণতন্ত্রের ক্ষতিসাধনের রাজনীতি। মানুষ খুনের রাজনীতি, লাশ বানানোর রাজনীতি।
এসময় সুষ্ঠু নির্বাচন করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভোট বর্জনের ডাক সফল: বিএনপি
‘একতরফা’ ভোট বর্জনের ডাক সফল হয়েছে বলে দাবি করে এতে সাড়া দেওয়ায় ভোটারদের ‘স্যালুট’ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের টেলিভিশন (গণমাধ্যম) ক্যামেরার ছবি কথা বলে। আমি বলছি যে হাজার হাজার লাখ লাখ ছবি এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনারা দেখতে পারছেন। কুকুরের ছবি দেখতে পারছেন ভোটকেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে। সেই ভোটকেন্দ্রের নাম হচ্ছে ঢাকা শহরের মেরাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এই যে পরিস্থিতি সিংহভাগ ভোটকেন্দ্র প্রায় ভোটারশূন্য অবস্থায়।’
রোববার গুলশানে নিজের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের মানুষ দেখছে, দেশের মানুষ দেখছে, এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ বর্জন করেছে। আজকে আমি জনগণকে আমাদের পক্ষ থেকে, শুধু বিএনপির পক্ষ থেকে নয়, এই যে ৬২টি রাজনৈতিক দল আমরা যারা এই প্রহসনের নির্বাচনকে বর্জন করেছি, তাদের সবার পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের মানুষকে স্যালুট জানাবো একটি মাত্র কারণে, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের প্রশ্নের কোনও দিন আপস করেনি, এবারও করবে না।’
ভোট বর্জনের আন্দোলন সফল হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে আবদুল মঈন খান বলেন, নিশ্চয়ই সফল হয়েছে। এখানে আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই এই আন্দোলন শুধু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ যে লগিবৈঠার আন্দোলন করে, সেই লগিবৈঠার আন্দোলন আমরা করি না। আমাদের অনেকে অভিযোগ করেছে যে আপনারা এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে সরাতে পারবেন না।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘হরতাল না হলেও তো ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি এমন হতো না। আগামীকাল দেখবেন, কোন কেন্দ্রে কত ভোট পড়ে, এটা সরকার করতে পারে, সরকার করুক, সরকার ৫ শতাংশ বলতে চাইলে ৫ বলবে, ৫০ শতাংশ বলতে চাইলে ৫০ বলবে, ৯৯ শতাংশ চাইলে ৯৯ বলবে। এমনকি ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো একটি কেন্দ্রে ১০৫ শতাংশও বলতে পারে। সেটা আমাদের কনসার্ন না।’
তিনি বলেন, ‘কি ভোট হচ্ছে সেটা সারা বিশ্ব দেখেছে, বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে।’
পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘হোয়াট ইজ নেক্সট। বাংলাদেশের মানুষ শুধু হোয়াট ইজ নেক্সট জানতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ একটি জিনিস চায়, তারা কথা বলতে চায়, তারা ভোট দিতে চায়, তারা এ দেশে গণতন্ত্র দেখতে চায় এই তিনটি উদ্দেশ্যে আমরা মানুষের পক্ষ হয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা এই তিনটি জিনিস এ দেশের মানুষকে ফিরিয়ে এনে দেবো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেমন আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে সেটা তো অস্বীকার করা যাবে না। আমি সেটা বলছি না। আওয়ামী লীগেরও এই দেশে সমর্থক আছে, বিএনপিরও সমর্থক আছে। বিএনপির সমর্থকদের আজকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না। তারা ভোটে নাই। আমরা প্রতিবাদ হিসেবে ভোট বর্জন করেছি।’
‘২ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি’
কারচুপি নয়, প্রকাশ্যে ডাকাতির ভোট হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এক অভূতপূর্ব রায় দিয়েছেন।
রোববার অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এমনকি আওয়ামী লীগের বিবেকবান লোকজনও আজ (গতকাল) ভোট দিতে যায়নি বলে খবর পেয়েছি। ২ শতাংশের বেশি ভোটার কেন্দ্রে নিতে পারেনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে গরু-ছাগল দেখা গেছে, এবারের ভোটের দিন যুক্ত হয়েছে বানরও।’