সুপ্রভাত ডেস্ক »
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।’ সোমবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু সপ্তম খণ্ড’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং কর্মকর্তা ও গবেষকরা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এখন আর রাজনৈতিক দলে নাই, বিএনপি এখন সন্ত্রাসীদের দলে। যারা রাষ্ট্রের বেদীমূলে আঘাত হানে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যারা হামলা চালায়, অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থার ওপর হামলা চালায়, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয় ভাঙচুর করে, যারা পুলিশ হত্যা করে, তারা কখনও রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তাই বিএনপি এখন কোনও রাজনৈতিক দল নয়, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আলোচনা হবে অবশ্যই। আওয়ামী লীগ যে কারও সঙ্গে আলোচনা করতে পারে, রাজনৈতিক দল হিসেবে। যারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে, যারা দেশের সংবিধান মানে, আইন ব্যবস্থাকে মানে, বিচার ব্যবস্থাকে মানে— তাদের সাথে আলোচনা হবে।’
হাছান বলেন, ‘২৯ অক্টোবর বিএনপি সারা দেশে হরতাল ডেকে সেই হরতালকে সফল করার জন্যে সেই আগের পুরনো ঘৃণ্য আগুন সন্ত্রাসের তা-বে ফিরে গেছে। আপনাদের মনে আছে, ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে কীভাবে গাড়ি চালকদের হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতেও সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ডেমরায় একটি বাস যেটি দাঁড়িয়েছিল, বাসের হেলপার ঘুমাচ্ছিল, সেই বাসে তারা আগুন দিয়েছে। সে আগুনে বাস পুড়ে গেছে, হেলপারও পুড়ে গেছে। বিএনপির আবারও সেই জঘন্য নৃশংসতা।’
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা স্পষ্টত এই নৈরাজ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তিন দিনের অবরোধ ডেকেছে। তাদের উদ্দেশ্য অবরোধ করা নয়, তারা জানে তাদের পক্ষে দেশে অবরোধ কার্যকর করা সম্ভবপর নয়। কিন্তু চোরাগোপ্তা হামলা, নৈরাজ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা অবরোধ ডেকেছে। মানুষ চোর-ডাকাত ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। আর যারা মানুষের ও সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেবে, ধ্বংস করবে— তারা চোর-ডাকাতের চেয়েও খারাপ। সুতরাং, তাদের বিরুদ্ধেও জনগণ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিএনপি ‘ভার্চুয়ালি’ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতারা কতটুকু ভীতু। ২৮ তারিখ কর্মীরা যাওয়ার আগে নেতারা পালিয়ে গেছে। নেতারা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীরাও পালিয়ে গেছে। আমরা সারা জীবন বিরোধী দলের কর্মী ছিলাম। আমরা রক্তাক্ত হয়েছি, কিন্তু আমরা পালিয়ে যাইনি কখনও। বিএনপি নেতারা সামনে আসতেই ভয় পায়, সে জন্য তারা ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতার নিন্দা জানানো প্রসঙ্গে প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, তাদের এই নিন্দা সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে— এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভিসানীতি নিয়েও ভাববে। আমরা আশা করবো, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হত্যা করেছে, পুলিশ আনসারসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে, জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়েছে, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সেই ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবে, আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং বিদেশি চিকিৎসকরা ফিরে গেছেন এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলছিল যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি, তাকে রক্ষা করা যাবে না। আমেরিকান চিকিৎসকরা এসে এখন বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি আগের তুলনায় ভালো আছেন। এ জন্য আমিও স্বস্তি প্রকাশ করছি এবং প্রার্থনা করি তিনি যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মার্কিন চিকিৎসকদের আসার ব্যবস্থা সরকারই করে দিয়েছে। বিএনপির বক্তব্যে প্রমাণিত হয়— তারা খালেদা জিয়াকে রাজনীতির গুটি বানিয়েছে এবং তার স্বাস্থ্যকে নিয়ে রাজনীতিটাই করে, মিথ্যাচার করে, আসলে স্বাস্থ্য ভালো করার চেষ্টাটা করে না।’