ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোটকমলদহ বাজারের আগে একটি একটি দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানের পেছনে বেপরোয়া গতির একটি মোটরসাইকেল সজোরে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয় ও গুরুতর আহত হয় একজন। আহত ও নিহতরা সবাই স্কুল ছাত্র। সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জনি (১৬), অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আকিব (১৪) ও নিজামপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ইমাম (১৬)। আহত স্কুল ছাত্রকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের কমলদহ বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
একইদিন রাঙামাটিতে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৬ যাত্রীর ২ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন। আহত হয়েছেন ৪ জন। সবাইকে তাৎক্ষণিক রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হলেও এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় কত জন মারা গেছে সে হিসাব এখানে নেই। তবে একটি বিষয়ে নজর না দিলে নয় সেটি হলো মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। প্রতিদিন যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তার বড় একটি অংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এখন থেকে সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে এবং প্রতিদিন এই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে।
গতবছর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছরে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪ হাজার ৭৯৯টি। এরমধ্যে শুধু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে ৪ হাজার ৬৪৮টি। এতে প্রাণ গেছে অন্তত ৪ হাজার ৬২২ জনের। গত কয়েক বছর ধরে মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ার সাথে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনাও। সংশ্লিষ্টরা বলছে যানজটের কারণে মোটরসাইকেল ব্যবহারে মানুষের উৎসাহ বাড়ছে। পাশাপাশি রাইড শেয়ারিংয়ের কারণে মোটরসাইকেলের চাহিদা আরও বেড়েছে। এছাড়া অন্য পরিবহনের চেয়ে দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় মোটরসাইকেল এখন মানুষের হাতের নাগালে।
সারাদেশে আনুমানিক ৫০ লাখ মোটরসাইকেল আছে বলে মনে করা হয়। এখন তো দেশেই সংযোজিত হচ্ছে মোটরসাইকেল। তাতে দামেও কম পড়ছে বিদেশের তুলনায়। যানজটসহ পরিবহন সুবিধা ভালো না থাকায় মোটরসাইকেলে চলাচলে আগ্রহী হচ্ছে সবাই। ফলে সারা দেশে দুর্ঘটনাও বেড়ে চলেছে। এ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ট্রাফিক আইন না মানা। ক্রমাগত বেড়ে চলা এ দুর্ঘটনা রোধে চালকদের সচেতনতা ও প্রশাসনেরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
দুর্ঘটনার জন্য আরেকটি কারণও আছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। সেটি হলো বিদেশ থেকে আমদানিকৃত মোটরসাইকেলে কর ফাঁকি দেওয়ার লক্ষে সিসি কম দেখানো হয়। আর বাস্তবে এইসব গাড়ির সিসি থাকে অনেক বেশি ফলে এই গাড়িগুলোর গতিবেগ বেশি। আর অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় কম বয়েসীরা এ ধরনের গাড়ি পছন্দ করে। সবকিছু মিলিয়ে এখন মোটরসাইকেল বড় ঘাতক হয়ে উঠেছে। এখনই এই প্রবণতা রোধ করা না গেলে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনার সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ