নিজস্ব প্রতিবেদক »
ফুটপাত অবমুক্ত করে নির্বিঘ্নে নাগরিক চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়ে থাকে। কিন্তু এ বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে প্রধান সড়কের অধিকাংশ দখল করে চলছে ফলের ব্যবসা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিআরটিসি মোড় থেকে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার জুড়ে সড়কের তিনভাগের দুইভাগ রাস্তা দখল করেছে তাল ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে ট্রাকে তাল এনে রাস্তার উপর লোড আনলোড করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু রাস্তা দখল নয়, এ ব্যবসার পেছনে গজিয়ে উঠেছে চাঁদাবাজ চক্র। তারা এসব তাল ব্যবসায়ী থেকে দৈনিক ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেন বলে দাবি করেছেন ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া কদমতলী পেট্রোল পাম্পের সামনের মোড় থেকে সিআরবিমুখী রাস্তাও তাদের দখলে।
অন্যদিকে রিয়াজউদ্দিন বাজারের স্টেশন রোড এলাকার ফলের আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, দেশের পাহাড়ি অঞ্চলগুলো থেকে আসা অর্ধশত শত ট্রাকের সারি। এসব ট্রাক থেকে রাস্তার উপর নামানো হয় হাজার হাজার কাঁঠালসহ নানা ধরনের ফল। এসব রাখার মতো কোন গুদামের ব্যবস্থা না করেই রাস্তা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে কাঁঠাল, আনারস, বেলসহ নানা ফলের বাজার। এসব দখলে জড়িতদের মধ্যে বেশি দেখা যায় ওই স্থানের ফলের আড়তদারেরা।
অন্যদিকে একইচিত্র দেখা যায়, ফিরিঙ্গী বাজারের রাস্তাও। তবে সেখানে ফল রাখার মতো অতিরিক্ত স্থানের ব্যবস্থা থাকার পরও রাস্তার উপর রয়েছে ফলের ব্যবসা।
বিআরটিসি এলাকার ব্যবসায়ী আমিনুল হুদা বলেন, সড়ক দখল করে ব্যবসা আজকের নতুন নয়। এর পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী লোকেরা। রাস্তা দখল করে ফলের আড়ত বানানো থেকে শুরু করে রাস্তার উপর রাখা ফলের গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবদুস সালাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্টেশন রোড ও বিআরটিসি এলাকায় রাস্তা দখল করে যে তাল ও কাঁঠালের আড়ত সৃষ্টি হয়েছে, এখানে নিজেদের নেতা পরিচয় দিয়ে অনেকেই করে চাঁদাবাজি। আমরা অভিযান চালানোর আগে তারা সরে পড়ে। তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসব বর্জ্য সরানো হয়।
স্টেশন রোডের এডি বাণিজ্যালয়ের মো. রফিক বলেন, আমাদের ফল রাখার মতো জায়গা না থাকায় রাস্তা দখল করে ব্যবসা করতে হয়। ট্রাকে যেসব ফল আসে তা আমরা দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠিয়ে দিই। এতে পথচারীদের সাময়িক ক্ষতি হয়, আমরা বুঝি। আমাদের করার কিছু নেই।
সিএমপি ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এম এন নাসিরুদ্দিন বলেন, স্টেশন রোড থেকে ফলমন্ডির ব্যবসায়ীরা বরাবরই রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছে। শুধু ফলের বাজার নয়, তাদের ফল নিয়ে আসা শত শত ট্রাকও রাস্তা দখল করে রাখে। তবুও আমরা চেষ্টা করি কোনভাবে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়।
এদিকে, দখল করা রাস্তার উপর তাল ও কাঁঠালের বাজার ব্যবস্থা পরিচালনা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে এসব স্থানে পরিত্যক্ত তালের খোসা জমে থাকতে দেখা যায়। আর বৃষ্টির কারণে দীর্ঘদিনের পচে থাকা এসব তালের খোসা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে মশার লার্ভা। দুয়েকটি ট্রাকে বর্জ্য সরানো হলেও দেড় কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে প্রায় বর্জ্য পচে দুর্গন্ধজনক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এসব তালের খোসায় পানি চলাচলের নালাও বন্ধ হয়ে যায়।
এ মুহূর্তের সংবাদ