সুপ্রভাত ডেস্ক »
চলতি মাসে ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন বা আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তবে নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভিগুলো সংবাদ প্রচার করতে পারবে না বলেও জানান তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশে অসংখ্য আইপি টিভি আছে যেগুলোর অনুমোদন নেই। আবেদন আহ্বান করা হয়েছে, ৬০০ এর মতো আবেদন পড়েছে। আমরা খুব সহসা এ মাসের মধ্যেই অনুমোদন দেব। যেহেতু আমরা অনুমোদন দেওয়া শুরু করিনি তাই কোনোটারই অনুমোদন নেই।
“আমরা খুব সহসা আইপি টিভির অনুমোদন দেব। অনুমোদন দিলেও কোনো আইপি টিভি সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না। আমাদের মূলধারার টিভিগুলোও শুরুতে সংবাদ পরিবেশনের অনুমোদন পায় না। প্রথমে ছয় মাস, এক বছর চালানোর পর আবার তাদের সংবাদ পরিবেশনের জন্য আবেদন করতে হয়, তখন তারা অনুমোদন পায়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে বহু আইপিটিভি চালু আছে এবং বহু আসবে বা হবে। যে যার মতো করে সংবাদ পরিবেশন করে বিভ্রান্তি ছড়াবে এটি কাম্য নয়। নীতিমালা পাস হয়েছে, আইপি টিভির নিবন্ধন এবং অনুমোদন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় দেবে। তবে তারা সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না।”
সম্প্রতি গ্রেপ্তার জয়যাত্রা আইপি টিভির মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপি টিভির অনুমোদন ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, “কিছু আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সময়-সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কিছু কিছু আইপি টিভি ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালিত হয়। নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ায়, নানা ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করে, সংবাদ পরিবেশন করে। এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের নজরে এলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ইতিমধ্যে অনেকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হেলেনা জাহাঙ্গীরের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার। তিনি এক সময় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটিতে ছিলেন। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেও ছিলেন তিনি।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি ‘ভূইফোঁড়’ সংগঠনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সভাপতি হওয়ার খবর চাউর হলে সম্প্রতি তাকে দুই কমিটি থেকেই বাদ দেয় আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর মিরপুরে জয়যাত্রা আইপি টিভির অফিসও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই টিভির ‘কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না’ বলে জানিয়েছিলেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বিধিনিষেধের মধ্যেও রপ্তানিমুখী কারখানাগুলো দেশের স্বার্থে খুলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “গার্মেন্টস মালিকরা বলেছিলেন ঢাকার আশপাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে আপাতত শুরু করবেন, কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো গার্মেন্টস মালিক সেটার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন।”
“আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে গার্মেন্টস মালিকদের আরেকটু সচেতন হওয়ার দরকার ছিল। সবাইকে আমি দোষ দেব না, কিন্তু যারা শ্রমিকদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন কাজে যোগদান করতেই হবে সেই বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে একটু ভুল ছিল।”
গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টিকা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যেসব দেশে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিয়েছে সেসব দেশেও করোনা বাড়ছে। যেসব দেশ মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল সেসব দেশে আবার স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করা হয়েছে। এগুলো তো জাফরুল্লাহ সাহেব জানেন। আসলে তিনি মাঝেমধ্যেই জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কথা বলেন। জাফরুল্লাহ সাহেবের বক্তব্য বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ছাড়া আর কিছু নয়।”
মাসে এক কোটি টিকা দিতে সরকারের ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সরকার রোডম্যাপ করেই এ ঘোষণা দিয়েছে। সরকার তো দুই-তিন মাস আগে এই ঘোষণা দেয়নি। উনারা তো বরাবারই টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। পরবর্তীতে তারাও টিকা নিয়েছেন। বিভ্রান্তি ছড়ানোর ধারাবাহিকতায় তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে বিভ্রান্তি ছড়ানো কখনও সমীচীন নয়।”