সংঘর্ষে জড়ালো আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরীর লালদীঘির জেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় ১৪ দল আয়োজিত সমাবেশে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষ। এতে প্রায় শতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া সমাবেশে আসা নেতাকর্মীসহ অন্তত ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতরা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকাল ৫ টায় সমাবেশ চলাকালীন দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সমাবেশে আহত নেতাকর্মীরা জানান, এমইএস কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা আরশাদুল আলম বাচ্চু এবং বর্তমানে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে উভয় পক্ষের সদস্যরা একে অপরকে চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি এবং পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পর পর দুইবার দলের সমর্থকদের মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে আসা আকাশ বাবু নামের এক কর্মী বলেন, ‘উভয়পক্ষের কথাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় ৫ জনকে রক্তাক্ত দেখেছি।

সমাবেশে আসা আরিফ নামের একজন বলেন, ‘তাদের মধ্যে কি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে তা জানি না। তবে আহত দেখলাম ১০ জনেরও বেশি হবে। কেন হয়েছে আমি জানি না।’

এ বিষয়ে জানতে এম ই এস কলেজের ছাত্রনেতা আরশাদুল আলম বাচ্চুর নাম্বারে ফোন করলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘গণসমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছে। অতিরিক্ত গরম ছিল। সবাই বসার সুযোগ পায়নি। এ সময় ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।

‘লোকজন বেশি থাকায় ছেলেরা বুঝতে পারেনি কী হয়েছে। বিএনপি-জামাতের কর্মীরা গণসমাবেশে আক্রমণ করেছে মনে করে ছেলেরা ইট মারতে শুরু করে। এসময় বিশৃঙ্খলা হয়ে যায়। ছেলেদের শান্ত করতে গেলে কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিনের মাথায় ইট পড়ে।’ এ সময় মোট চার-পাঁচজন আহত হন বলে জানান তিনি।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, গণ সমাবেশে মিছিল নিয়ে আসার সময় সমাবেশস্থলের সামনে বিকেল পাঁচটায় এম ই এস কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা আরশাদুল আলম বাচ্ছু এবং ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে দুইপক্ষই ইট পাটকেল ছুঁড়লে কাউন্সিলর ওয়াসিমের মাথায় লাগলে তিনি আঘাত পান। এ সময় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি, শেখ হাসিনার চেতনাকে বিশ্বাস করি, তারা সমাবেশে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারি না।’ তিনি আগামীতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।

খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এ গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল বলেন, ‘এখানে আসা সবাই ভাই ভাই। ভাইয়ের সাথে ভাই লড়াই করা মানতে পারি না। লড়াই হবে বিএনপি-জামায়াতের সাথে। তাদের সাথে লড়াই করতে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।’

সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘স্লোগান দিয়ে, বিশৃঙ্খলা করে যারা সমাবেশ বানচাল করতে চাই তারা দলের লোক হতে পারে না। তাদের পারিবারিক শিক্ষা নেই।