সুপ্রভাত ডেস্ক »
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে গেলেও বিষয়টি এখনো স্বস্তির না বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ রোববার দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবদ আমিন এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো সংখ্যাতত্ত্ব দেখিয়েছি কিন্তু আমাদের সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বস্তির না। কোভিড-১৯ এর স্টেবল ট্রান্সমিশন যদি বলি, তাহলে পাঁচ শতাংশের নিচে নিয়ে আসতে হবে। এখনো আমাদের সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশের বেশি। এই পাঁচ শতাংশে চলে আসার পরও যে একটি দেশ কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে তা বলা যাবে না। একটা সময় আসতে হবে, যখন আমরা বলতে পারবো ২৪ ঘণ্টায় কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। কোনো মৃত্যু হয়নি। এই অবস্থা যদি আমরা দুই থেকে তিন সপ্তাহ টানা রাখতে পারি, তখন আমরা বলতে পারবো কোভিড-১৯ সম্পূর্ণ রূপে নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
সংক্রমণ আবারও বাড়তে পারে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বলা খুব কঠিন। যে ইনফেকশান হচ্ছে এটি আনপ্রেডিকটেবল একটি ভাইরাস। এটার অনেক ধরনের ভ্যারিয়েন্ট আছে। বাংলাদেশ কিন্তু ইতোমধ্যে সবগুলো ভ্যারিয়েন্ট দেখে ফেলেছে। আলফা, বেটা, গামা, ডেলটা এবং প্রাকৃতিক একটি বৈশিষ্ট্য হলো— এই ধরনের ভ্যারিয়েন্টগুলো দীর্ঘ সময় থাকে না, দুর্বল হয়ে পড়ে। যে কারণে বর্তমান সময়ে আলফা, বেটা, গামা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের যে বৈশিষ্ট্যগুলো আমরা দেখতে পেয়েছি বিভিন্ন দেশে, দুই থেকে তিন মাস ঝড়ের মতো প্রভাব থাকে এরপর ধীরে ধীরে এই ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট কমে যায়। হয়তো বাংলাদেশও সেই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেটাও বলতে পারছি না নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দেশে আসবে কি না। সম্ভাবনা সব সময় থাকবে। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি, তাহলে যে কোনো ভ্যারিয়েন্ট আসুক না কেন সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি নিবন্ধন কার্যক্রম সহজ করার পরও অনেকে টিকা নিতে চাচ্ছেন না। বিশেষত সিনিয়র সিটিজেন যারা আছেন আমাদের দাদা-দাদি, নানা-নানিদের টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধনের ব্যবস্থা যেন আমরা নিজেদের উদ্যোগে করি। টিকা প্রাপ্তির কারণে সবাইকে টিকা দিতে আমাদের অনেক সময় লেগে যাবে। আমাদের দেশে উৎপাদন হচ্ছে বা আমরা যদি অনেক টিকার ব্যবস্থা করতে পারতাম তাহলে অনেক বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া যেত।
আমাদের এখানে হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস বড় সমস্যা। আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ে যে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেখানে এ ধরনের রোগীদের তালিকাভুক্ত করা হয়। পরামর্শ দেওয়া হয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার বিনামূল্যে এসব রোগীদের ওষুধ দেয়। অসংক্রমণ রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে চর্বিযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত লবণ, মিষ্টি ও শর্করা জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তামাক ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে, বলেন রোবেদ আমিন।