সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
আগের ম্যাচে ছয় মিনিটে হ্যাটট্রিক করা দরিয়েলতন গোল পেলেন না। তাতে অবশ্য জয় পেতে খুব একটা অসুবিধা হলো না আবাহনী লিমিটেডের।
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে পাওয়া এবারের জয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে এলো মারিও লেমোসের দল। গতকাল শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় প্রিমিয়ার লিগে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ৩-১ গোলে হারায় আবাহনী লিমিটেড।
শুরুর ২০ মিনিটে ছন্দ খুঁজে পায়নি কোনো দল। তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে ধার বাড়ায় আবাহনী। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার সুযোগ বানিয়েও শেখ রাসেলের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি মারিও লেমোসের দল। দ্বিতীয়ার্ধে বাজিমাত করে আবাহনী। জুয়েল রানা-মিলাদ শেখরা দ্রুত গোল আদায় করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে সমতায় ফেরার চেষ্টায় খানিকটা এগোলেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত আর পারেনি শেখ রাসেল। ১৯ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় শেখ রাসেল। বাঁ দিক থেকে রহমত মিয়ার বাঁকানো ক্রস পান থিয়াগো। বক্সের ভেতরে বাঁ পা দিয়ে বল নিচে নামিয়ে শরীর ঘুরিয়ে তার নেওয়া গতির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৪মিনিটে ম্যাচে প্রথমবার পোস্টে বল রাখতে সক্ষম হন আবাহনীর দরিয়েলতন। নাবীব নেওয়াজের জীবনের ক্রসে এই ব্রাজিলিয়ানের হেডে গতি না থাকায় কোনো বিপদ ঘটেনি। পরের মিনিটে কাউন্টার আক্রমণে যায় শেখ রাসেল। জুয়েলের বাড়ানো পাস ধরে বক্সের সামনে থেকে থিয়াগোর নিচু শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন শহিদুল আলম সোহেল। ২৭ মিনিটে শেখ রাসেলের রক্ষণ কাঁপায় আবাহনী। প্রথম দফায় জুয়েল রানার কোনাকুনি শট আশরাফুল রানা ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বলে মিলাদ শেখের জোড়াল শট থিয়াগোর পায়ে লাগলে পেয়ে যান দরিয়েলতন, গোলমুখ থেকে তার নেওয়া শট ক্রস বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শূন্য সমতায়।
৪৯ মিনিটে জুয়েল রানার গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী। ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেসের কর্নার দরিয়লতনের ব্যাক হেড চলে যায় দুরের পোস্টে,সেখানে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন এই স্ট্রাইকার। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া শেখ রাসেল। ৫১ মিনিটে মোহাম্মদ জুয়েলের হেড কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন সুশান্ত ত্রিপুরা। ৬১ মিনিটে আবাহনীর লিড বাড়ান ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখ। এই গোলে ফুটে উঠে শেখ রাসেলের রক্ষণের বাজে অবস্থা। এইতন ম্যাচাদোর ভুল পাস থেকে বল পান জুয়েল রানা। তার থেকে সোহেল রানার পা ঘুরে বল পান মিলাদ শেখ। বক্সের সামনে থেকে দারুণ শটে বল জালে জড়ান এই ইরানি ডিফেন্ডার। ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি আশরাফুল রানা। ৬৪ মিনিটে এক গোল শোধ দেয় শেখ রাসেল। এইলতন ম্যাচাদো সঙ্গে বল দেওয়া করেন ইসমাইল রুতি। সেখান থেকে বাড়িয়ে দেন হেমন্ত ভিনসেন্টের কাছে, তার পাস রেজাউল করিমের পায়ে লেগে দিক পালটে পেয়ে যান ইসমাইল রুতি, এজ অফ দ্যা বক্স থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটেই সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন শেখ রাসেলের এইলতন ম্যাচাদো। থিয়াগোর দারুণ ক্রসে অফ-সাইড ফাঁদ ভেঙ্গে ডান পায়ের ভলি করলেও তা লক্ষ্যে রাখতে পারেনি এই ব্রাজিলিয়ান।
৮৪ মিনিটে জীবনের গোলে জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর। সুশান্তের পাস থেকে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান জাতীয় দলের এই স্ট্রাইকার। শেষ দিকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি আবাহনীর ফরোয়ার্ডরা। দিনের অন্য ম্যাচে মুন্সিগঞ্জে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান। গোল করেছেন সোলেমান দিয়াবাতে ও শাহরিয়ার ইমন।
চার ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এলো আবাহনী। সমান ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে নেমে গেল শেখ রাসেল। গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় পুলিশ এফসিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে হোম ভেন্যুর নতুন পথচলায় শুভসূচনা করেছিল বসুন্ধরা কিংস। সমান ম্যাচে নয় পয়েন্ট দ্বিতীয় স্থানে অস্কার ব্রুজোনের দল। খবর বাংলানিউজের
দিনের আরেক ম্যাচে মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে শুক্রবার সাইফ স্পোর্টিংকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান। মোহামেডানের ৪ ম্যাচে পয়েন্ট হলো ৮। টানা দুই জয়ের পর টানা দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ পাওয়া সাইফের পয়েন্ট ৬।