পারকি বিচে দাঁড়িয়ে
আমি আজ যাচ্ছি।
তোমার জলের কাছে
আমার স্নানের ইচ্ছেটুকু রেখে গেলাম।
সারাবেলা সমুদ্র খেলে
তীর ও তরঙ্গে জড়িয়ে থাকা
দূরত্ব ও নৈকট্যের নিগূঢ় খেলা,
তা কি আমি জানি না ভাবছো?
আমি কিছু ফেলে যাই না, রেখে যাই।
কথাটি মনে রেখো।
জানতে পেলে কি?
তোমার দোলাচলের আগুনে আমি ঘোর দগ্ধ হই।
রেখেছ তো বিশ্বাসের ছলে,
আমি দুরন্ত ছুটে চলেছি প্রান্ত থেকে প্রান্তরে।
তোমার বিশ্বাসে যখন গ্রহণ লাগে,
আমি ছিটকে গেছি কেন্দ্র থেকে।
দেয়া-নেয়ার হিসেব-ক্লান্ত আমি
অভ্যস্ত গার্হস্থ্য চ্ছিন্ন করে অদৃশ্য আলপথ ধরে
মনে মনে গেলাম পালিয়ে।
আহা, তুমি জানতে পেলে কি?
আমি কেমন করে তোমাকে ছেড়ে যাবো, ছি!
আমাকে ডেকে নিও
তোমাদের ডাক পেলেই আমার ছুটে যেতে ইচ্ছে হয়,
আমি তোমাদের ভেতর দেখেছি
পাথরকে দু’হাতে সরিয়ে দুরন্ত ঝরনার জলকে অবগাহনের জন্য আপন করে নিয়েছ,
আমি তেমন মানুষকেই তো জীবনের কাছে চেয়েছি।
তোমরা ডাকলেই আমার ছুটে যেতে ইচ্ছে হয়
তোমরা আগুনকে উপেক্ষা করে
সংকুল পথের বাঁক বদলে নিতে জানো।
আমি তেমন মানুষকে জীবনের কাছে খুঁজেছি।
আমাকে ডেকে নিও
তোমাদের নূতন কোনো বিপন্নতায়
পাথর ও আগুন যে অবিরাম থাকে অমীমাংসায়।
মায়া
মাঠের গরুটার খুঁটির দড়ি নিয়ে দুষ্টুমির ছলে
খেলতে খেলতে হঠাৎ বিদ্যালয় ফেরত বালকটির ভেতর
এক রাখাল জেগে ওঠে।
নিজের ভেতর সে এক
অপার্থিব খেলায় মহানন্দে মেতে থাকে।
চেতনে-অবচেতনে দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ নেই তার,
বালক বয়স যার।
সে শুধু হেঁটে চলে তার বাসনার তীরে তীরে
গরুর সাথে খেলার টানে সে বারে বারে আসে ফিরে।
সে কি তবে সত্যি মাঠের রাখাল হতে চায়
নাকি সে জড়িয়ে যায় জটিল এক বিভ্রান্তির মায়ায়?
সন্তান
সুখে-অসুখে মুঠোফোনে খবর রাখে
বড় আদরের ছেলেটি তাহার।
দেশেই থাকে, দূরে দূরে পাতে সংসার
অতন্দ্র প্রহরায় তার বিপুল সম্পদের ভার।
মা বলে,
‘যখন জ্বরের শয্যায় থাকি
কিংবা বসি একাকী আপনমনে
আমাদের সেই দক্ষিণের আকাশভরা বারান্দায়,
বাবা রে
কখনও সখনও হাত দু’টি তোমার
আমার হাতে দিও।’
‘মা, একলা মায়েরা একা কীভাবে থাকে
ভালো করে একটু শিখে নিও।’
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ
দ্রৌপদীর প্রেমিকেরা ও অন্য একজন (১৯৮৬ তে যৌথভাবে প্রকাশিত, দ্রৌপদী)
সম্পর্কের স্বরলিপি (২০২০, বাতিঘর)
দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীন (২০২২, বাতিঘর)
যাপন যদিও আপন কাঁটাতারে (২০২৩, খড়িমাটি)
প্রকাশিতব্য
একান্নবর্তী আকাক্সক্ষা (২০২৫, খড়িমাটি)