নিজস্ব প্রতিবেদক »
আজ মহাষষ্ঠী। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কেনকাটার জন্য নতুন কাপড়ের চাহিদা বরাবরই থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। শেষ মুহূর্তে নগরীর বিভিন্ন মাকের্টে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। পূজা উপলক্ষে দোকানগুলোও সাজানো হয়েছে নতুন ডিজাইনের কাপড়ে।
নগরীর টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, সেন্ট্রাল প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করে। শাড়ি-থ্রি পিচ, জুয়েলারিসহ থান কাপড়, শিশুদের কাপড় ও জুতোর দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। শারদীয়ার নকশায় অধিকাংশ সুতি কাপড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকার কথা জানান দোকানিরা। তারা জানান, অধিকাংশ ক্রেতা ৮০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকার কাপড় কিনতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে দোকানিদেরও মুখে ফুটেছে হাসি।
ব্যবসায়ীরা জানান, টেরিবাজারে ছোট-বড় একশর কাছাকাছি মার্কেট ও তিন হাজারের কাছাকাছি দোকান রয়েছে। করোনার পর থেকে কোনো উৎসবে আর আগের মতো আর ক্রেতাদের ভিড় থাকে না। জমজমাট কেনাকাটা এখন আর হয় না। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও গুছিয়ে নিয়েছে তাদের ব্যবসায়িক কৌশল। বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় আনলেও আগের মতো বেশি পরিমাণে তারা আর কাপড় আনে না।
সেন্ট্রাল প্লাজা থেকে সুমি রক্ষিত নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘পূজার বাজার করতে এসেছি। দরদাম তেমন একটা বেশি মনে হচ্ছে না। তবে চেয়েছিলাম, একবারে শীতের কেনাকাটাও করে নিবো। কিন্তু দোকানে তেমন একটা কালেকশন দেখা যাচ্ছে না।’
টেরিবাজারে কেনাকাটা করতে আসা শ্রীলা চৌধুরী বলেন, ‘বাচ্চাদের তো বাহানা ম-পে ম-পে নতুন কাপড় পরে ঘুরে বেড়ানোর। তাই মূলত বাচ্চাদের জন্যই কেনাকাটা করতে এসেছি। পাশাপাশি মা-বাবার জন্য কিছু কেনাকাটা করবো। নতুন বেশ কিছু কালেকশন এসেছে। বেশিরভাগ সুতি কাপড়ের কালেকশনগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে। ভারত থেকেও অনেক কাপড় এসেছে। ওগুলোতেই দেখছি, সবার আগ্রহ।’
টেরিবাজারের দোকানি লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘অনেকদিন পর মার্কেটে কেনাকাটা বেড়েছে। শেষবার এতো ক্রেতা দেখেছি রমজানের ঈদে। এবারের নববর্ষের আগেও আমরা অনেক কাপড় তুলেছি। কিন্তু সেভাবে ওতোটা ক্রেতা আসেনি।’
সিডিএ মার্কেটের দোকানি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘পূজার কেনাকেটা অনেক জমেছে। এখন আর্থিক অবস্থার কারণে মধ্যবিত্ত ও নি¤œআয়ের লোকজন বিলাসিতা করছে না। তারপরও মার্কেটে প্রতিদিনই লোকজন আসে। টুকটাক কেনাকাটা হয়। তবে আগের মতো মার্কেটগুলো জমে না। এবার পূজার কেনাকেটায় অনেকে এসেছে। তবে মানুষ আরও আগে থেকে কেনাকাটা শুরু করলে আরও ভালো হতো।
প্রসঙ্গত, পঞ্জিকা অনুযায়ী ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে মর্ত্যলোকে আহ্বান জানানো হয় দেবী দূর্গাকে। ২০ অক্টোবর ষষ্ঠীর মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠিকতা শুরু হবে। ২৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।