এলিভেটেড এক্সপ্রেস নির্মাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় পিলারের নিচে পাইপ দিয়ে সেন্টারিং করায় রাস্তার জায়গা বেশি দখল হলেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পাইপের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে লোহার পিলার। আর এতে রাস্তার জায়গা বেশি দখল হচ্ছে না। ফলে যানজটের ভোগান্তিও অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কার্যক্রম ঘুরে দেখা যায়, পিলারের উপরে ওয়াইক্যাপ নির্মাণে লোহার পিলার দিয়ে সেন্টারিং করা হয়েছে। ক্যান্ডিলেবেল পদ্ধতির এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নির্মাণাধীন সময়ে গাড়ি চলাচলের রাস্তার চওড়া কমছে না। যদি পাইপ দিয়ে সেন্টারিং করা হতো তাহলে রাস্তার অনেকখানি ব্লক থাকতো। এতে ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাটি নির্মাণকালে সরু হয়ে যেতো।
এ বিষয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে আমরা এই প্রযুুক্তি ব্যবহার করিনি। ক্যান্ডিলেবেল পদ্ধতির মাধ্যমে সেন্টারিং করায় নিচ দিয়ে ঠিকই গাড়ি চলাচল করতে পারছে। নির্মাণকাজে আগে যেখানে ৩৫ ফুট জায়গা ব্যবহার করা হতো। এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে তা ২২ ফুটে নেমে এসেছে। ফলে ১৩ ফুট জায়গা উভয় দিক থেকে খালি থাকছে এবং যান চলাচলের জন্য সহজ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, একইসাথে আমরা পিলারের চওড়াও কমিয়েছি। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে পিলারের চওড়া ১২ ফুট থাকলেও এলিভেটেডে ৮ ফুটে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে পিলারের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
সম্প্রতি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ ঘুরে দেখা যায়, পিলারের ওয়াইক্যাপ (পিলারের যে স্থানের উপর গার্ডার বসবে) ঢালাইয়ের সময় সেন্টারিংয়ে লোহার পিলারের ফরমা চোখে পড়ে। আর এই ফরমার কারণে পিলারের ওয়াইক্যাপ বরাবর নিচে সেন্টারিং করতে রাস্তার জায়গা দখল করতে হয়নি। ফলে নিচ দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারছে। এতে ইপিজেড ও বন্দরটিলা এলাকায় তুলনামূলকভাবে যানজট কম হচ্ছে।
উল্লেখ্য, লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যে ইপিজেড থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত পিলার নির্মাণের কাজ শেষ। সিমেন্ট ক্রসিং থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত গার্ডার বসানোর কাজও শেষ। এখন ইপিজেড থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত পিলার বসানোর কাজ চলছে। অপরদিকে আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত পিলারের কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত থাকা বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত অংশের নির্মাণ নিয়েও সুরাহা হয়েছে। এতে রাস্তার ডিভাইডারের উপর দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হবে।
সরকারি অর্থায়নে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স রেনকিন জেভি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিমানবন্দরমুখী মানুষ দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে।