নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে শ্রীহীন হয়েছে। বালিয়াড়ি ভাঙনের পাশাপাশি ভেঙে তছনছ হয়েছে রাস্তা। সৈকত তার নিজস্ব সৌন্দর্য হারিয়ে পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে পড়লেও উত্তাপ কমেনি সাগরের। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তাল ঢেউ আঘাত হানছে বালিয়াড়ি ও জিও ব্যাগে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী সৈকত দেখতে ভিড় করেছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রাও। তারা চান যত দ্রুত সম্ভব সাগরের তীরের ময়লা আবর্জনা যাতে সড়ানো হয়। আবারো আপন রূপে যেন সাগর তার সৌন্দর্য ফিরে পায়। সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চ জোয়ারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সৈকতের কিটকট ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ব্যাপক তা-ব চালিয়েছে ৩ কিলোমিটার সৈকতে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট, তলিয়ে গেছে জিও ব্যাগ। সৈকতের শৈবাল থেকে কলাতলী পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙন হয়েছে বালিয়াড়ির। ৮ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়ে আঘাত করেছে সৈকত এলাকায়। সৈকতের দরিয়ানগর ও নাজিরারটেক এলাকায় বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ভেসে গেছে ঘরের আসবাবপত্র।
সিরাত আরা নামের এক পর্যটক বলেন, সাগর উত্তাল। যার কারণে সাগরে নামতে ভয় লেগেছে। তাই দূর থেকে দেখে ছবি তুলেছি। রাতে জোয়ারের পানির ভয়ে সাগর না দেখে হোটেলের রুম চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে সৈকতপাড়ে এসে দেখি সবকিছু তছনছ অবস্থা। সৈকতের পুরো সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। বালিয়াড়িতে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর।
অন্যদিকে, সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেন লাইফ গার্ড কর্মীরা। সি সেইফ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মোহাম্মদ সিরু বলেন, সাগর উত্তাল হওয়ার কারণে এখনো পর্যটকদের নামার অনুমতি নেই। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নামতে দেয়া হয়নি। মাইকিং করছি এবং পর্যটকদের অনুরোধ করা হয়েছে নির্দেশ মেনে চলার জন্য।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রশাসনের তৎপরতার কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিনে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। তারপর দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কাজ শুরু হবে।
এদিকে কক্সবাজারের ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ১ লাখেরও বেশি মানুষ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়েছেন।