চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালে আইসিইউ বেড, অক্সিজেন প্ল্যান্ট এবং করোনা পরীক্ষায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি গতকাল ১৬ জুন (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজার সরদার সাহাদাত আলী’র সাথে মতবিনিময়কালে এ অনুরোধ জানান।
এ সময় সুজন বলেন, করোনাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের জনগণের স্বাস্থ্যসেবার বর্তমান পরিস্থিতি সকলের মতো আপনিও অবগত আছেন। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন মানুষ। আমি কিংবা আপনি আমরা কেউই বিপদমুক্ত নই। তারপরও মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে মানবতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দাদের বিশাল জায়গা জমি তৎকালীন সময়ে রেলওয়ের আধুনিকায়ণ এবং বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই চট্টগ্রামের জনগণের আবেদন হলো এই দুঃসময়ে আমরা রেলওয়েকে আমাদের পাশে পেতে চাই। আমি চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আপনার কাছে এ অনুরোধ জানাতে এসেছি।
রেলওয়ে হাসপাতালটির ১০০ সিট করোনা রোগীদের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করায় জেনারেল ম্যানেজারকে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, নগরীর কোলাহলমুক্ত এ হাসপাতালটি পরিপূর্ণভাবে করোনা রোগীদের উপযোগী করে প্রস্তুত করে তুলতে পারলে চট্টগ্রামের রোগীসহ সর্বস্তরের জনগণ উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালটিতে আইসিইউ বেড এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। তাছাড়া করোনা রোগীদের জীবন বাঁচাতে এ মুহূর্তে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হচ্ছে অক্সিজেন।
তাই দ্রুততার সাথে অক্সিজেন প্ল্যান্টটি স্থাপনে জেনারেল ম্যানেজারের আশু দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।
এছাড়া তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে একটি বিশাল পরিবার। এখানে রেলওয়ের রয়েছে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। এরা প্রতিদিনই ট্রেন পরিচালনা, মেরামত, পার্সেল এবং যাত্রী সেবা দিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সংস্পর্শে আসছেন অথচ পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব রয়েছে তাদের। এর মধ্যে যদি কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সংক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া অমূলক নয়। ইতিমধ্যে কোভিড আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন শ্রমিক-কর্মচারীরও মৃত্যু হয়েছে। রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় রেলওয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই অতিসত্বর রেলওয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সর্বস্তরের স্টাফদের করোনা পরীক্ষার জন্য একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন জরুরি। পিসিআর ল্যাবের অভাবে অনেকে সঠিক সময়ে পরীক্ষা করতে পারছেন না, আর পরীক্ষা করলেও রিপোর্ট পেতে সময় বেশি লাগছে।
তিনি রেলওয়ে পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাদের জন্য একটি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনেরও আবেদন জানান।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজার সরদার সাহাদাত আলী স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নাগরিক উদ্যোগের কর্মকা-ের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস একটি জাতীয় দুর্যোগ। এ দুর্যোগে কারো বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে মানবতার কল্যাণে। আপনারা জানেন ঢাকার মতো চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালটিও করোনা রোগীদের ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অক্সিজেন প্ল্যান্টটি স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনারের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। দ্রুততার সাথে অক্সিজেন প্ল্যান্টটি স্থাপনে আমি নিজ উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করেছি। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবো আমরা। এছাড়া পিসিআর ল্যাব স্থাপনের বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় আছে। আমাদের কর্মকতা, কর্মচারীসহ সর্বস্তরের স্টাফদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে মন্ত্রণালয়।
এছাড়া তিনি মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে সম্পূর্ণ করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করার উদ্যোগ গ্রহণ করায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদকে ফোনে অভিনন্দন জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, কেন্দ্রীয় রেল শ্রমিক লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সহ-ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রকিবুল আলম সাজ্জী, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
Uncategorized