সুপ্রভাত ডেস্ক »
তারল্য ব্যবস্থাপনা বা একীভূতকরণের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকসহ রুগ্ন ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাপক অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির কারণে এস আলম নিয়ন্ত্রিত ছয় ব্যাংকসহ নয় ব্যাংক এক বছরেরও বেশি সময় চরম তারল্য সংকটে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারল্য সহায়তা স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা দেউলিয়া ঘোষণার পর্যায়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তা পেলে এসব ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শক্তিশালী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে একীভূত করে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের মতো টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দেবে না, তবে ওইসব ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রা সরবরাহের মাধ্যমে সহায়তা নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে।
সাত রুগ্ন ব্যাংক আমানতকারীদের অর্থ পরিশোধে তারল্য সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছে। সম্প্রতি এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এমনই এক রুগ্ন ব্যাংক গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমানতকারীদের টাকা পরিশোধের জন্য তারল্য সহায়তা পেতে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তিন কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। এগুলো হচ্ছে—দেশের অর্থনীতির স্বার্থ, আমানতকারীদের স্বার্থ ও উৎপাদনে জড়িত ব্যক্তিদের স্বার্থ।’
পুনর্গঠিত ব্যাংকগুলোর পর্যবেক্ষণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এস আলম গ্রুপের ছয় ব্যাংকের মধ্যে কেবল ইসলামী ব্যাংকই তারল্য সংকট কমাতে পেরেছে।’
বাকি পাঁচ ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ইউনিয়ন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে আছে।
ওই পাঁচ ব্যাংক তারল্য সহায়তা ছাড়া ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে পারবে না।
পুনর্গঠিত অন্য ব্যাংকগুলো হলো: ন্যাশনাল, এক্সিম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, আল আরাফাহ ইসলামী ও আইএফআইসি। এর মধ্যে ন্যাশনাল ও এক্সিম তারল্য সংকটে আছে।
গত রোববারের সংবাদ সম্মেলনে আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলে প্রত্যেক আমানতকারী ব্যাংক আমানত বিমার বিপরীতে আগের এক লাখ বিপরীতে দুই লাখ টাকা ফেরত পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের বাইরে চলে গেছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে।’
এখন নগদ উত্তোলনের সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে প্রায় ১০ ব্যাংকে এখনো সমস্যা আছে। তাই তাদের গ্রাহকদের আরও কিছু দিন ধৈর্য ধরতে হবে।