রিফা ও নারী দিবস

ফারুক হোসেন সজীব »

রিফা আজ দাদির সাথে হাঁটতে বের হয়েছে। কিন্তু কোথায় হাঁটবে সে? রাস্তা-ঘাট নিরাপদ নয়। দাদি বললেন, বেশি দূরে যাওয়া ঠিক হবে না রিফা! এসো আমরা বরং বাড়ির চারপাশটা ঘুরে-ঘুরে দেখি। আর গল্প করি!
দাদির মুখে গল্পের কথা শুনে রিহা ভীষণ আনন্দিত এবং উচ্ছাসিত হলো।
দাদি বললেন, বলো তো সোনা! আজ কী দিবস?
রিফা গালে হাত দিয়ে মনে করার চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুই মনে করতে পারল না।
দাদি বললেন, আজ বিশ^ নারী দিবস। আজকের দিনটিতে নারীদের সংগ্রামের কথা স্মরণ করা হয়। এই দিবসে অনেক নারী তাদের অধিকার আদায়ে লড়াই করেছে। একজন নারী নেত্রী ছিলেন যার নাম ক্লারা জেটকিন। তিনি নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য অনেক কাজ করেছিলেন।
রিফা দাদিকে বলল, ক্লারা জেটকিনের বিষয়ে আরও শুনতে চাই দাদিজান।
দাদি বললেন, ক্লারা জেটকিন ছিলেন একজন মহান নারী। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক ও সমাজকর্মী। তিনি নারীদের ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নারীদের জন্য স্বাধীনতা এবং সমান অধিকার খুবই জরুরি। তার জন্যই আজকের দিনে বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন করা হয়। ১৯১০ সালে, দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে তিনি প্রস্তাব করেন যে, প্রতি বছর ৮ই মার্চ নারী দিবস হিসেবে উদযাপন করা হোক। তার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয় এবং তখন থেকেই প্রতি বছর ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
রিফা বলল, আমিও আন্দোলন করতে চাই। সমাজ থেকে সমস্ত বৈষম্য দূর করতে চাই। দাদি শুনে হেসে বললেন, প্রতিটি নারীই স্ব-স্ব অবস্থান থেকে আন্দোলন করছে। স্কুলে, অফিসে, সংসারে, সব জায়গায়। তবে নারীর শক্তি শুধু বাহ্যিক শক্তিতে নয়, তার শক্তি মন মননে এবং হৃদয়ে।
রিফা দাদিকে প্রশ্ন করল, নারীরা কি সব কাজ করতে পারে?
হ্যাঁ! নারীরা সব কাজ করতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা মানুষ। আর মানুষ যে কোনো কাজই করতে পারে। এক সময় নারীশিক্ষার কোনো গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু এখন নারীশিক্ষা ছাড়া কোনো সমাজই উন্নতি করতে পারে না। রিফা আজ দাদির সাথে হেঁটে-হেঁটে নারী দিবসের অনেক কথা শুনল এবং অনেক কিছু জানতে পারল।
রিফা শপথ করল, সেও নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে। নারীদের শিক্ষিত করে তুলবে। এই সমাজ, দেশ থেকে অন্ধকার দূর করবে, দেশকে আলোকিত করবে!