নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি :
রাঙামাটি ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসরিন ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
গতকাল সকালে রাঙামাটি প্রেসক্লাব সম্মেলনকক্ষে এই জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলেন, রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান বাপ্পী, জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আনোয়ার হোসেন কায়সার, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ইমরুল উদ্দিন, রাঙামাটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ১০-১৫ জন আমাকে দরজার ভিতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে আটকে ছুরি, রড দিয়ে আঘাত করেছে। এমনকি আমার নাবালিকা মেয়েকে নির্যাতন করে গায়ের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৪ আগস্ট রাত নয়টার সময় উপজেলা পরিষদের টিউবওয়েল বসানো নিয়ে আমার বাসায় এক সভা চলাকালে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর জব্বার সুজনের ছত্রছায়ায়, তার লালিত ছাত্রলীগের ওই চার নেতা আমার বাসায় হামলা করে। এ সময় তারা বাসার ভিতর ভাঙচুরসহ আমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এদের মধ্যে মেজবাহ উদ্দিন আমার বিল্ডিংয়ে ভাড়া থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সে ভাড়া দেয় না। ভাড়া চাইলে ক্ষিপ্ত আচরণ করে।
তার অভিযোগ, এসব বিষয়ে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও অজ্ঞাতকারণে এখনো মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি অভিযোগটি। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, আওয়ামী লীগের সমর্থনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ছাত্রলীগের এসব সন্ত্রাসীদের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এসব কর্মকা-ে সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান সংবাদ সম্মেলনে।
নাসরিনের অভিযোগের জবাবে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবির হোসেন বলেন, যেহেতু এই ঘটনায় অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী সকলেই একই রাজনৈতিক দলের এবং ঘটনাটির সাথে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আছে, তাই আমরা ঊর্ধ্বতনদের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা তদন্ত করছি, তদন্ত শেষে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি এলাকাভিত্তিক ঘটনা। এখানে দলীয় বিষয়টি টেনা আনা ঠিক হবে না। উনিও দলীয় ব্যানারে নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। তাই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হয় কিনা চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু উনি যেহেতু থানায় অভিযোগ দিয়েছেন এখন পুরো বিষয়টি আইনের মাধ্যমে সমাধান হোক।
সহযোগী সংগঠনের জুনিয়র নেতাদের হাতে দলের নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি লাঞ্ছিত হবার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মুছা মাতব্বর বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন যদি জেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, তবে বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব।’