নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
বর্ষা মৌসুম যেন পার্বত্য রাঙামাটির মানুষের কাছে এক আতঙ্কের সময়। প্রতিবছরই এই সময়টা এলেই আতঙ্কে থাকেন জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত মানুষ। পাহাড়ধস রোধে প্রশাসনের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এবারও রাঙামাটিতে নানান পদড়্গেপ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটি জেলা শহরের পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড বসিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে স্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে সচেতনতামূলক লিফলেট। এসময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব হোম দাশ, মো. ইসলাম উদ্দিন, মো. বোরহান উদ্দিন মিঠু ও রাঙামাটি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা প্রমুখ উপসি’ত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্ততি হিসেবে যে সকল কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তারই অংশ হিসেবে জেলা শহরের পাহাড়ধসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আমরা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছি। এছাড়া জনসাধারণকে সচেতন করতে ও আশ্রয়কেন্দ্রের নামসহ প্রচারপত্র বিলি করছি। যাতে করে তারা বিপদে পড়লে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, কেবলমাত্র রাঙামাটি শহরের ২৫টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে পাঁচ হাজার পরিবার। সমপ্রতি রাঙামাটিতে প্রতিদিন মাঝারি বর্ষণের ফলে শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রূপনগর, শিমুলতলী, ভেদভেদী নতুন পাড়া, মনতলা, যুব উন্নয়ন এলাকায় সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। পাহাড়ে পাদদেশে বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জেলা শহরে প্রস্তত রাখা হয়েছে ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনায় ১২০ জনের প্রাণহাতি ঘটে। এসময় জেলাজুড়ে তাণ্ডবে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়ক ও খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের একটি বিশাল অংশ ধসে টানা ১৭ দিন সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে পার্বত্য রাঙামাটি। এর পরের বছর ২০১৮ সালের ১২ জুন জেলার নানিয়ারচরে পাহাড়ধসের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালেও জেলার কাপ্তাইয়ে পাহাড়ধসে তিনজনের মৃত্যু হয়। স্মরণকালের বিভীষিকাময় অতীত থেকেই প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুম এলেই রাঙামাটির মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে।