নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর চকবাজারে মাদ্রাসা পড়ুয়া ১১ বছরের এক শিক্ষার্থী শাবিব শাইয়ানকে শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা মামলায় পলাতক প্রধান আসামি রিদুয়ানুল হককে (৩২) গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় জড়িত আরো দুজনকে ইতিপূর্বে গ্রেফতার করেন সিএমপি পুলিশ।
সোমবার কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার বমুবিলছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি একই থানার চরণদ্বীপ এলাকার বদিউল আলমের পুত্র। গ্রেফতারের বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার নিশ্চিত করেন র্যাব।
জানা যায়, নিহত ভিকটিম শাবিব শাইয়ান (১১) নগরীর চকবাজার মেহেদীবাগ এলাকার একটি মাদ্রসায় হেফ্জ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রতিদিন সকাল ৬টায় তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরী মাদ্রাসায় পৌঁছে দিতেন আর রাত ৯টায় বাসায় নিয়ে আসতেন। প্রতিদিনের মতো ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ রাতে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার গেইটের সামনে তিনি উপস্থিত হলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. ফোরকান মোবাইল ফোনে জানায় তার ছেলে মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় অবস্থিত একটি বাথরুমে গিয়েছে।
এরপর বাথরুম থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিশু শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ানকে অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত শিক্ষকদের জানালে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পান ভিকটিম শাবিব শাইয়ান তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় দিয়ে বাথরুমের টাওয়াল স্ট্যান্ড এর সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তখন শিক্ষার্থীরা বিষয়টি শাবিব শাইয়ানের বাবা মশিউর রহমান চৌধুরীকে জানায়। খবর পেয়ে মশিউর রহমান চৌধুরী দ্রুত মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় গিয়ে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় শাবিব শাইয়ান’কে ঝুলন্ত অবস্থা হতে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু ভিকটিম শাবিব শাইয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ঘটনায় ১৬ মার্চ নিহত ভিকটিমের পিতা মশিউর রহমান চৌধুরী বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামি করে নগরীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক তাপস কর্মকার বলেন, ‘শাবিব শাইয়ান হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিদুয়ানুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে অকপটে স্বীকার করে যে, উক্ত হত্যাকা-ের সঙ্গে সে সরাসরি জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকা-ের ঘটনাটি প্রাথমিক পর্যায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে লাশের ময়নাতদন্তে নিহত ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের প্রমাণ ও বলাৎকারের আলামত পাওয়া যায়।’
গ্রেফতারের পর আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করেন বলে নিশ্চিত করেন সিএমপির চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার।