আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। ৫১ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।
১৯ মিনিটের এক জাদুকরি ভাষণে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
৭ মার্চ বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মতো স্বাধীনতাসংগ্রামের রূপরেখা দেন। এ ভাষণে জাতিকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বানের পাশাপাশি ছিল দিকনির্দেশনাও।
সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এদিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসেবে ২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে ।
এমন কালজয়ী ভাষণের জন্য নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি প্রায় ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
বিশ্বের সেরা ভাষণের মধ্যে এই ভাষণটির ব্যতিক্রমী দিক হলো যে এটা লিখিত ভাষণ ছিল না। বঙ্গবন্ধু লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ভাষণ দিয়েছিলেন। বিশ্বের অন্য নেতাদের ভাষণ ছিল লিখিত।
অবিনশ্বর কথামালার এই বক্তৃতা শুনে শ্রোতার প্রতিটি রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়, আবেগে উদ্বেলিত হয় মন এবং প্রবল শক্তিতে জেগে ওঠে চেতনা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের অমূল্য উত্তরাধিকার, যার গৌরব অনুভূত হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।