সুপ্রভাত ডেস্ক :
আধুনিক জীবনের, বিশেষ করে শহুরে মানুষের জীবনযাত্রার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠছে এখন ক্রেডিট কার্ড। এই কার্ড জীবনকে সহজ, ঝামেলাহীন ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলছে। নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধের শর্তে কোনো সুদ ছাড়াই নেয়া যায় অর্থ ধার। অর্থাৎ খরচ করার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করা যাবে।
বাংলাদেশে ‘প্লাস্টিক মানি’ বা ক্রেডিট কার্ড ১৯৯৬ সালে সর্ব প্রথম স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক চালু করে। এর পর সময়ের ব্যবধানে ক্রেডিট কার্ড চালু করে তৎকালীন বণিক বাংলাদেশ (বর্তমানে লংকাবাংলা) ও ন্যাশনাল ব্যাংক। বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংকেরই ক্রেডিট কার্ড সুবিধা রয়েছে। তবে এই কার্ড নিতে হলে কিছু শর্ত রয়েছে।
সাধারণত ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী বা অন্য পেশাজীবী, যাদের আয় ৩০ হাজার বা তার বেশি এবং বৈধ টিন (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) আছে, তারা ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
আবেদনের ক্ষেত্রে ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (টিন) সার্টিফিকেটের এক কপি প্রদান করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি, নিদিদ্দষ্ট পরিমাণ পাসপোর্ট ও স্ট্যাম সাইজের ছবি। একজন নোমিনি ও নোমিনির পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে। আয়ের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে চাকরিজীবীরা সেলারি সার্টিফিকেট, ব্যবসায়ীরা ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি, ক্ষেত্র বিশেষে পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়ের কয়েকটি চালানের ফটোকপি জমা দেয়া লাগতে পারে। আপনি যে ব্যাংক থেকে কার্ড নেবেন সেই ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে অথবা পূর্বে ক্রেডিট কার্ড নিয়েছেন এমন একজনের রেফারেন্স প্রয়োজন হবে।
ক্রেডিট কার্ডে অর্থ খরচের একটি সীমা, পরিমাণ বা লিমিট দেয়া থাকে। খরচের এই পরিমাণকে ‘ক্রেডিট লিমিট’ বলা হয়। অর্থাৎ আপনি লিমিটের বাইরে খরচ করতে পারবেন না। কোনো ব্যাক্তি ক্রেডিট কার্ড নিতে গেলে তার আয় কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা হতে হবে। অন্যথায় কার্ড দেয়া হয় না। আর আয়ের উপর নির্ভর করেই নির্ধারণ করা হয় ‘ক্রেডিট লিমিট’।
আপনার আয় যদি ১ লাখ টাকা হয় তাহলে আপনি ২ লাখ টাকা বা তার কিছু বেশি ক্রেডিট লিমিট পেতে পারেন। কোনো কোনো ব্যাংক ২ লাখের কমও দিতে পারে। সেটি আপনার আয়ের ধরন এবং ব্যাংকের নিয়মের উপর নির্ভর করবে। খরচ করার পর এই অর্থ আপনি সুদ বিহীন পরিশোধ করতে পারবেন যদি ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করেন।
দেশের বাইরের কোনো ওয়েবসাইট কিংবা এটিএম বুথ এ লেনদেন করতে চাইলে পাসপোর্টে এই কার্ডের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এন্ডোর্স করিয়ে নিতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে এই এন্ডোর্সমেন্ট ও এ ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না।
নগদ টাকা বহনে ঝুঁকির পাশাপাশি নগদ লেনদেনে মানি লন্ডারিংয়ের আশঙ্কা থাকে। এরই অংশ হিসেবে দেশে ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তুলতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে কাগুজে নোটের চেয়ে কার্ড বা অনলাইনে লেনদেন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
বিজনেস