সুপ্রভাত ডেস্ক »
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিতে চায়। সেজন্য শ্রম নীতিতে কিছু সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে চলমান ডলার সংকট মোকাবেলায় ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স কর্পোরেশন থেকে দেশটি অর্থায়ন করতে চায় বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আজ (বুধবার, ১৫ মে) যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে উঠে আসা আলোচনার বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় করতে কথা হয়েছে। ৫৩ বছরের অভিযাত্রায় তারা আমাদের সাথে আছে। আমাদের সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যেতে চায় তারা। রপ্তানির বড় ডেস্টিনেশন তারা। আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে তাদের বিনিয়োগের আহবান জানানো হয়েছে।’
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশকে আবারও জিএসপি সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিতে চায় তারা। সেজন্য আমাদের শ্রম নীতি কিছুটা ঠিক করতে হবে।’
ডলার সংকটে বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি। অনেকটা থমকে গেছে আমদানি-রপ্তানি। তবে এই সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমনটাই জানিয়েছেন ডোনাল্ড লু।
বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে এবং এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য এবং আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার জন্য তিনি (ডোনাল্ড লু) তাদের ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন থেকে বাংলাদেশকে অর্থায়ন করতে চান।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ট্যাক্স ফাঁকি বন্ধে ট্যাক্স সিস্টেমকে তারা আধুনিক করতে বলেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে ২৫ লাখ লোক কর দেয়, এখানে কয়েক কোটি লোকের কর দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু কর দেয় না। কর ব্যবস্থাকে আধুনিক করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে চায় এবং একইসঙ্গে কর ফাঁকি যে দেওয়া হয়, সেটি বন্ধের জন্য সহায়তা করতে চায় তারা।’
২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এবং আমরা এখন যে সুবিধা পাই, সেটি আর থাকবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশের যাত্রা যেন মসৃণ হয়, সেটির জন্যও সহায়তা চেয়েছি বলে জানান হাছান মাহমুদ।
বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের ছাত্ররা যেন পড়তে যেতে পারে সে ব্যাপারে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নেও তারা আমাদের সাথে কাজ করবে। মূলত তারা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়।’
এর আগে এর আগে দুপুর ৩টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছান ডোনাল্ড লু। প্রায় ঘণ্টা-খানেকের বৈঠক শেষে বিকাল ৪টায় বের হন এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে তিনি বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেন সাংবাদিকদের।
এর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।