চুরির অপবাদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
উপজেলার হারবাংয়ে গরু চুরির অপবাদে রশি দিয়ে বেঁধে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের মধ্যে মা-মেয়েসহ তিনজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব এ জামিন দেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার, তার মেয়ে সেলিনা আক্তার ও রোজিনা আক্তার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক। পুলিশ সোমবার সকালে মা পারভীন আক্তার ও মেয়ে সেলিনা আক্তারকে আদালতে উপস্থিত করেন। এসময় আদালত মা-মেয়েসহ তিনজনকে জামিন দেন। অন্য দুই আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এদিকে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ তিনজন গ্রেফতার করেছে। এরা হল হারবাং ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম (২০), জসিম উদ্দিন (৩২) ও নাছির উদ্দিন (২৮)। তিনজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ওসি মো.হাবিবুর রহমান।
এছাড়া কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেনের নির্দেশে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার পরিচালক (উপ-সচিব) শ্রাবন্তী রায়কে প্রধান করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি তানভীর হোসেন ও উপজেলা বিআরডিবির প্রকল্প কর্মকর্তা (হারবাং ইউনিয়নের দায়িতপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ) সঞ্জয় চক্রবর্তী।
সোমবার তদন্ত টিমের প্রধান স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) শ্রাবস্তী রায়ের নেতৃত্ব তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম হারবাং ইউনিয়নের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেছেন। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজের নেতৃত্বে আরেকটি তদন্ত কমিটি মাঠে কাজ করছে।
এদিকে বিষয়টি প্রসঙ্গে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, গরু চুরি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহিলাদের কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত কমিটিকে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত শুক্রবার গত ২১ আগস্ট দুপুরে চকরিয়া উপজেলার হারকাং ইউনিয়নে এক মহিলা, তার দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ ৫ জনকে সিএনজি অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে গরু চুরির অপবাধ দিয়ে কোমরে রশি বেঁধে পেটায় কিছু লোক। পরে তাদের কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে নিয়ে যাওয়া হয় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে। সেখানেও তাদের মারধর করে ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান। একপর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদেরকে পরিষদ কার্যালয় থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।