সুপ্রভাত ডেস্ক »
ক্ষমতাসীন জোট সরকারের মধ্যে দলাদলির কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন হারানো মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিইদ্দিন ইয়াসিন সোমবার পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় এক গণমাধ্যম। খবর বিডিনিউজের।
ঘটনা সত্যি হলে তা কেবল মুহিইদ্দিনের টালমাটাল ১৭ মাসের প্রধানমন্ত্রীত্বেরই অবসানই ঘটাবে না, কোভিড-১৯ এর ঊর্ধ্বগতি ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় লড়তে থাকা মালয়েশিয়াকে আরও অনিশ্চয়তার দিকেও ঠেলে দেবে।
এখন পর্যন্ত অন্য কোনো আইনপ্রণেতার পক্ষে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন না থাকায় পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, কিংবা দেশটিতে মহামারীর মধ্যেই নতুন নির্বাচন হবে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা বোঝা যাচ্ছে না বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর কী হবে, সেই বিষয়ে দেশটির সাংবিধানিক শাসক রাজা আল-সুলতান আব্দুল্লাহই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
মালয়েশিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিভাগের এক মন্ত্রী মোহাম্মদ রেজোয়ান মোহাম্মদ ইউসুফের বরাত দিয়ে রোববার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি জানায়, মুহিইদ্দিন সোমবার পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
এ খবর প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে মোহাম্মদ রেজোয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স; মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও কিছু বলেনি।
মোহাম্মদ রেজেয়ান মালয়েশিয়াকিনি’কে জানান, সরকার টেকাতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে ক্লান্ত হওয়ার পর মুহিইদ্দিন পদত্যাগের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দলের সদস্যদের বলেছেন।
‘আগামীকাল মন্ত্রিসভার একটি বিশেষ বৈঠক হবে। এরপর তিনি পদত্যাগপত্র দিতে (রাজপ্রাসাদে) যাবেন,’ বলেছেন রেজোয়ান।
গত বছরের মার্চে দুর্বল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে প্রধানমন্ত্রী হলেও মুহিইদ্দিন কখনোই ক্ষমতা পুরোপুরি নিজের কব্জায় নিতে পারেননি। ক্ষমতাসীন জোটের সবচেয়ে বড় অংশ ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) কিছু সাংসদ সম্প্রতি সমর্থন উঠিয়ে নিলে তার ওপর চাপ আরও বেড়ে যায়।
মালয়েশীয় এ প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পদত্যাগের দাবি অগ্রাহ্য করে আসছিলেন, সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মাধ্যমে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
শুক্রবার তিনি প্রথমবারের মতো তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন নেই বলে স্বীকার করে নেন। আস্থা ভোটে সমর্থন পেতে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে বিরোধীদের মন জয় করারও চেষ্টা করেছিলেন তিনি, তবে তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। তার প্রস্তাব সবাই প্রত্যাখ্যান করে।
মুহিইদ্দিন পদত্যাগ করলে, নির্বাচিত সাংসদদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে মনে হওয়া এমন যে কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ।
গত বছর মাহাথির মোহাম্মদের আকস্মিক পদত্যাগের পর তিনিই মুহিইদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক