প্রশাসনের সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ দাবি
জিয়াবুল হক, টেকনাফ :
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে মাদকাসক্ত ও বখাটেদের উৎপাত।জানা যায়, উখিয়া-টেকনাফের একটি পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রতিটি এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায় কিছু স্থানীয় মাদকাসক্ত ও বখাটে ছেলেদের নানান অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলছে। উত্যাক্ত, মাদক সেবন, ইভটিজিং, চুরি, ডাকাতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খুনখারাবির কাজে লিপ্ত হচ্ছে এলাকার যুবক ছেলেরা। তার মধ্যে অনেকেই মাদক সেবনকারী আবার কেউ বেকারত্বের অজুহাতে রাস্তাঘাটে বসে দিন রাত আড্ডায় মেতে উঠেছে।সরেজমিনে টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, সাবরাং, হ্নীলা, বাহারছড়া, সেন্টমার্টিন, হোয়াইক্যং, উখিায়ার রাজাপালং, পালংখালী, রতœাপালং, হলদিয়াপালং, জালিয়াপালং, ইউনিয়নের এলাকা গুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি এলাকায় গ্রাম্যকিছু দোকানপাটে বসে থাকে বখাটে ও মাদকাসক্ত যুবক। কথায় কথায় বাজি, জুয়াতে ব্যস্ত, আবার কেউ পথচারী নারী-পুরুষদের টিটকারি, মেয়েদের ইভটিজিং থেকে শুরু করে নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় সচেতনমহলের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।টেকনাফ পৌরসভা কুলাল পাড়া এলাকার স্কুলের শিক্ষক মো. মোস্তাক জানান, এলাকার কিছু কিছু বখাটে ছেলে নিয়মিত পথচারীদের দেখলে বিভিন্ন কায়দায় কথা বলে থাকেন। এই নিয়ে এলাকার শিক্ষিত সমাজ চরম বেকায়দায় পড়েছে। উখিয়ার রাজাপালং মুহুরীপাড়ার ছেলে উখিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মাস্টার্স পড়ুয়া ছাত্র নুরুল আমিন বলেন, এলাকায় গুটিকয়েক ছেলেদের ইয়াবা সেবনে ধ্বংস হচ্ছে শিক্ষিত যুব- ছাত্র সমাজ। দিনরাত কিছু কিছু বখাটে ছেলেদের উম্মাদনায় এলাকাবাসীর জীবন-যাপন অতীষ্ট হয়ে পড়েছে। এদের আশ্রয়দাতা ও প্রশ্রয় দাতাদের সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি এলাকার সুন্দর একটি মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মানে প্রশাসনের সহযোগিতায় এলাকাটি মাদকমুক্ত করুন।টেকনাফের সাবরাং সিকদার পাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী শওকত আলী জানান, সাবরাং ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকায় উঠতি বয়সের অসংখ্য যুবক ছেলেরা মাদকাসক্তে সম্পৃক্ত হয়ে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ইয়াবা সেবন ইভটিজিং, চুরি ডাকাতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়তেছে, এসবের জন্য মা, বাবা ও স্থানীয় জনগণ দায়ি বলে আমি মনে করি। প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি আপনারা এলাকায় বখাটে যুবক ছেলেদের ব্যাপারে খোজ খবর রাখুন প্রয়োজনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়ে মাঠে কাজ করুন। এতে এলাকায় মাদকাসক্ত ও ইভটিজার কমে যাবে বলে মনে করি।উখিয়ার পালংখালী এলাকার মো. রায়হান জানান, আমরা মূলত রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বসবাস করি এমনিতেই আমাদের এলাকার পরিবেশ ভাল নেই, তার মধ্যে মাদকের কথা কি বলব রোহিঙ্গা ক্যাম্প হচ্ছে মাদকের আস্তানা এইখানে পাওয়া যায়ানা এমন কোন মাদকদ্রব্য নেই, ইয়াবা থেকে শুরু করে সব ধরণের মাদক ক্যাম্পে পাওয়া যায় খুব সহজে সেবনকারী ও বিক্রেতারা মাদকের বিনিময় করতে পারে।
টেকনাফ সদর ছাত্রলীগের সভাপতি শফিক আলম শকু বলেন, এলাকায় কিছু মাদক ব্যবসায়ী আছে তাদের কারণে এই এলাকায় কিছু যুবক ছেলেরা মাদকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের থামাতে পারলে পরিবেশবান্ধব একটি এলাকা হবে এটি।হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী এলাকার শফিক আহম্মদ জানান, হ্নীলা স্টেশন বাজারের আশে পাশেই প্রতিদিন চলে যুবক ছেলেদের জুয়া, ড্রাগ, বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বাজি ও বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতার ছড়াছড়ি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখে ঢেলে দিচ্ছে তারা। এই এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি জরুরী হয়ে পড়েছে।এব্যাপারে উখিয়া থানার (ওসি) আহমদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, সঠিক তথ্য ও লিখিত অভিযোগ পেলে উখিয়া থানার পুলিশ সরাসরি এদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।এবিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পরিবেশ ভাল রাখতে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। এলাকার বখাটে ও মাদকসেবনকারীদের তথ্য দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।