মাতামুহুরী নদীতে নামছে ঢলের পানি, বন্যার আশঙ্কা

টানা ভারী বৃষ্টিপাত

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »

সাতদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লামা আলীকদমের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি কক্সবাজারের চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে নদীর পানি বিপদসীমা ৫ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটারের বিপরীতে ৫ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে নামছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জোনের সহকারী প্রকৌশলী (এসও) জামাল মোর্শেদ। রাতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে শুক্রবার ভোরের দিকে বিপদসীমা অতিক্রম করে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মাতামুহুরী নদীর তীর এলাকা উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, পূর্ববড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান ফারহানা আফরিন মুন্না, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন বলেন, সাতদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লামা আলীকদমের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি মাতামুহুরী নদীতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। যদি উজানে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে লোকালয়ে ঢুকে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হবে।
তারা বলেন, মাতামুহুরী নদীর পানি সহজে নীচে নেমে যেতে হলে উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের স্লুইসগেট সমুহের জলকপাট খুলে দিতে হবে। নইলে পুরো চকরিয়া উপজেলার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে চিংড়িজোনের হাজারো মৎস্য ঘের, কৃষকের ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট এবং জনগণের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ।
জানা গেছে, টানা সাতদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা এলাকার বেশিরভাগ নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় সড়কগুলোতে খানা খন্দক দেখা দিয়েছে। এতে জনগণের স্বাভাবিক চলাচল ব্যহৃত হচ্ছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জোনের সহকারী সহকারী প্রকৌশলী (এসও) জামাল মোর্শেদ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ি ঢলের বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনা, পুরুত্যাখালী বাজার, বাংলা বাজার, বিএমচর ইউনিয়নের কন্যারকুম, ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দিগরপানখালী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বেড়িবাঁধ সমুহ অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, চলমান ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া উপজেলায় নদী ভাঙ্গন এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবার আশংকা রয়েছে। তাই অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে উপজেলার স্লুইস গেইট সমূহের জলকপাট খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নদীর তীরে এবং নিম্নাঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে সর্তক করা হচ্ছে।