মহানগর ছাত্রলীগ : নতুন কমিটির শীর্ষ পদে যারা আগ্রহী

নিজস্ব প্রতিবেদক গ্ধ
নেতা-কর্মীদের দীর্ঘ এক দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের এমন সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। নড়েচড়ে বসেছেন ঝিমিয়ে থাকা নবীন, প্রবীণ নেতাকর্মীরাও। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে। অনেকেই চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপি এবং মহানগর আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতাদের সুপারিশ পেতে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন। তবে নতুন কমিটিতে একেবারে ক্লিন ইমেজের মেধাবী ছাত্র এবং দুঃসময়ে সংগঠনের কাজে মাঠে ছিলেন এমন কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
নগরের বিভিন্ন কলেজ এবং থানার ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদ পাওয়ার জন্য আলোচনায় রয়েছে কয়েক ডজন ছাত্রনেতা। তারা কেউ কেউ নগরের শীর্ষ কলেজের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক আবার কেউ কেউ নগরের বিভিন্ন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। যাদের নাম আলোচনার শীর্ষে রয়েছে তারা হলেন- চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, হালিশহর থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবদুর রহিম জিসান, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসমত খান আতিফ, নগর ছাত্রলীগের উপ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রাশেদ চৌধুরী, কমার্স কলেজের সভাপতি ফখরুল রুবেল, নগর ছাত্রলীগের সদস্য আরাফাত রুবেল, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের (নৈশ) যুগ্ন আহ্বায়ক এম এইচ ফয়সাল, ওমরগনি এম ই এস কলেজের জাহিদুল ইসলাম প্রমি, কোতায়ালি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জুনায়েদ, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আকবর খান, পতেঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান হাবীব সেতু, ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার, চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নুর নবী সাহেদ, কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিন্দ্য দেব, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ইবনে জামান ডায়মন্ড, এজিএস নোমান সাইফ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম, কমার্স ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল আলম আলভী, সিটি কলেজ (নৈশ) শাখার ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আশীষ সরকার নয়ন, ভিপি মো. তাসিন, মহানগর ছাত্রলীগের উপসম্পাদক ফাহাদ আনিছ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত বাপ্পি, মহানগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক অরবিন সাকিব ইভান, মহানগর বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আরফাত হোসাইন অনিক, শামীমুর রহমান, খালেদ হোসেন অন্তর প্রমুখ।
নগর ছাত্রলীগের উপ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রাশেদ চৌধুরী বলেন, আমি বাকলিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম।বাকলিয়া কলেজ একসময় ছাত্রদল, শিবির নিয়ন্ত্রিত কলেজ ছিলো। আমরা সেই কলেজকে ছাত্রলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিণত করেছি। আমি তৃণমূল থেক ছাত্র রাজনীতি করে আসছি। এবার মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে একজন প্রার্থী। আশা করি কেন্দ্র আমাকে মূল্যায়ন করবে।
কোতায়ালি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জুনায়েদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন সিটি কলেজে ছাত্ররাজনীতি করেছি। বর্তমানে কোতায়ালি থানা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করছি। ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সবসময় সোচ্চার ছিলাম। তাই মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আমার জীবনবৃত্তান্ত জমা দেবো।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি জানান, আমরা একটা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই স্মার্ট বাংলাদেশের ছাত্র নেতৃত্বও স্মার্ট হতে হবে। নেতৃত্বে যারাই আসুক না কেন তারা যেন শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে। কম্বল বিতরণ, খাদ্য বিতরণ এসব কাজের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ না রেখে তারা যেন ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে, সরকারের শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে নতুন নেতৃত্ব যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রণোদনা, ভাতা, বৃত্তির ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ যেন শিক্ষার্থীদের পথপ্রদর্শক হয়। এসব কাজ করলেই ছাত্রলীগের মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর ইমরান আহমেদ ইমুকে সভাপতি এবং নুরুল আজিম রনিকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৪ জনের আংশিক কমিটি দেওয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১১ জুলাই আংশিক কমিটির সদস্যরাসহ ২৯১ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরবর্তীতে ২০১৮সালের ১৯ এপ্রিল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন নুরুল আজিম রনি। তখন তার স্থলাভিষিক্ত হন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। পরবর্তীতে তাকেও ভারমুক্ত করা হয়। সর্বশেষ এক বছরের জন্য অনুমোদিত কমিটির ইতোমধ্যে দশ বছর পার হয়েছে।