মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘দিন-রাত সবসময় মানুষ মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। এই মশা নিয়ে আমি নিজেও বিব্রত।’ গতকাল বুধবার চসিক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।

মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নগরীর আন্দরকিল্লার কে বি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আবদুস সবুর লিটন প্রমুখ।

মেয়র বলেছেন, যতদিন খালগুলো মুক্ত না হবে, পানির প্রবাহ স্বাভাবিক না হবে, ততদিন এ অবস্থার উন্নতি হবে না। ‘বাস্তবতাকে আমি অস্বীকার করি না। দিনেও মশা, রাতেও মশা। এ নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি।’
তিনি বলেন, ‘মশার উপদ্রবের কথা অস্বীকার করছি না। নগরীতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে ২৬টি খালে। অনেক খালে বাঁধ। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকদিন আগে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে লজ্জায় পড়েছি।
‘খালের বাঁধে পানি জমে আছে। ঢিল ছুঁড়ে মারলাম, মনে হল কয়েক হাজার কোটি মশা উড়ছে। অথচ তিন দিন আগে সেখানে মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছে!’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘হাজার কাজ করলেও মশার উপদ্রব কমবে না। জলাবদ্ধতার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নালা-খালা দখলকারী যতই প্রভাবশালী হোক, উচ্ছেদের ক্ষেত্রে ‘কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’।

মশার উপদ্রব দূর করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকদের পরামর্শে ওষুধ ছিটিয়েছি। জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ শেষ হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম। ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মেয়রের দায়িত্ব নেন।

রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার দেনা এবং নানা সমস্যা মাথায় নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিই। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

এর আগে মেয়র তার বক্তব্যে নগরীর ৭৬৯ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন, ২২টি কালভার্ট, ১০টি গোল চত্বর, ১৪টি ব্রিজ, ২২টি কালভার্ট, ৩৮টি ফুটওভার ব্রিজ এবং ১টি ওভারপাস নির্মাণের জন্য বিনা ম্যাচিং ফান্ডে ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন লাভের বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া নগরীর ৩০টি সড়কের ৭৬ কিলোমিটার অংশে পোল বসিয়ে এলইডি লাইট স্থাপনের মাধ্যমে আলোকায়ন, পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে ২৫ হাজার ২৫,০০০ বর্গফুট স্ল্যাব মেরামত ও নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, চসিকের ৪১ ওয়ার্ডের ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ জন নিবন্ধনকৃত নগরবাসীকে কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে। ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২১ জনকে প্রথম ডোজ ও ১ লাখ ২১ হাজার ৭১ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে।