পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। যা সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে জন্ম নেয় এবং তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বংশবিস্তার করে। সাধারণত বছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই মশার বিস্তার হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে কিউলেক্স মশার উপদ্রবও বেড়ে যায়।
এর কারণ হিসেবে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মশক নিধনে এখনো কোনো ধরনের ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়নি। তবে কালো তেল এবং নানা ধরনের ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি স্প্রে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নতুন পুরোনো মিলিয়ে ২৫০টি ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। স্প্রে করার মেশিনও আছে পর্যাপ্ত। আছে কালো তেল এবং ওষুধের যথেষ্ট মজুদ। তবে তারা বলছেন, প্রতিদিন নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৮ থেকে ২০ লিটার করে কীটনাশক স্প্রে করলে পুরো নগরে ব্যবহার করতে বছরে ৩ লাখ লিটার কীটনাশক প্রয়োজন হবে। কিন্তু প্রতি বছর গড়ে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার লিটার কীটনাশক সংগ্রহ করে। এ কারণে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে মশক নিধনে ওষুধ স্প্রে করা সম্ভব হয় না। পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী ‘এডাল্টিসাইড’ সংকট থেকেই গেছে।
তবে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার আই ইউ এ চৌধুরী বলেন, এডাল্টিসাইড পর্যাপ্ত মজুদ আছে। জোরদার স্প্রে শুরু হলে মশক নিধন কমবে। চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. সরফুল ইসলাম মাহি গণমাধ্যমকে জানান, এখন ছড়িয়ে পড়া মশার সবগুলো কিউলেক্স মশা। মশক নিধনে ২৫ হাজার লিটার ওষুধ কেনার টেন্ডার করা হয়। সাড়ে ১২ হাজার লিটার সরবরাহ পৌঁছে গেছে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে আগে দু’বেলা করে মশার ওষুধ ছিটাতাম। এখন তিনবেলা করে দিচ্ছি। আশা করছি মশা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
অন্যদিকে আবর্জনা বর্জ্যের কারণে ওষুধ ছিটানো হলেও অনেক সময় লার্ভা পর্যন্ত যেতে পারে না। তাই মশার ওষুধ ছিটালেও সবখানে সমান কার্যকর হয় না। নগরীতে ১ হাজার ৬শ’ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে অন্তত ৫শ’ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার হয়ে গেছে। বাকিগুলো দ্রুত পরিষ্কার করা হবে।
প্রতিবছর মশানিধনে সিটি করপোরেশন প্রচুর অর্থব্যয় করে থাকে। কিন্তু তা মানহীন ও অপর্যাপ্ত হওয়ায় কোনোকিছুই কাজে লাগে না। এ বিষয়ে বর্তমান মেয়র কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করি। মশক নিধনে বছরের ব্যবধানে চারগুণ ব্যয় বাড়িয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। মশার কামড়ে প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী। মৃত্যুও বরণ করছেন অনেকেই। নগরবাসীর অভিযোগ মশক নিধনে গতানুগতিক পদ্ধতির ব্যবহার এবং অবহেলা ও অনিয়মের কারণেই চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তবে চসিকের কর্তকর্তারা বলছেন, মশা মারতে তারা চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না।
মশাবাহিত রোগ বাড়ছে
চসিককে আরও সক্রিয় হতে হবে