নিজস্ব প্রতিবেদক »
ভুয়া সচিব ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭)। সোমবার পৌনে ৬টার সময় নগরীর খুলশীর জিইসি মোড় এলাকায় র্যাব-১ এবং র্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রকাশ আলম (৪৭) ফেনীর পরশুরাম থানার কলাপাড়া এলাকার এছাক চৌধুরীর পুত্র। গ্রেফতারের বিষয়টি গতকাল বুধবার সন্ধ্যেয় নিশ্চিত করেছেন র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, প্রতারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী নিজেকে কখনো সচিব, কখনো সাংবাদিক এবং কখনো সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় ব্যবহার করে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় এর অধীনে মিল্কভিটা প্রজেক্ট, তথ্য মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রাণালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক এবং সাধারণ জনগণের নিকট হতে ব্যাংক এবং ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোটি কোটি অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ মে র্যাব-১ একটি অভিযান পরিচালনা করেন। এতে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রেফতার মোজাম্মেল পালালেও তার ব্যবহৃত ২টি গাড়ি ১টি পাজেরো জিপ, ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৬৮৭৯ যাতে মন্ত্রণালয়ের স্টিকার ও ফ্লাগ স্ট্যান্ড যুক্ত এবং ঢাকা মেট্রো-চ ৫১-৫২৭৮ নোহা গাড়ি যাতে ‘এসএ টিভির’ প্রেস লেখা ছিলো। পরবর্তীতে জব্দকৃত এসব গাড়িতে তল্লাশি করা হলে সেখানে তার নামে ২টি আইডি কার্ড পাওয়া যায়। যার ১টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রবেশপত্র আইডি কার্ড নম্বর-৫২৯ এবং অপরটি ‘দৈনিক নয়াদেশ’ এর সাংবাদিক কার্ড নম্বর ২০২১১১০১১১১। এছাড়া নোহা গাড়ির গ্লাসে এসএ টিভির ‘প্রেস’ লেখাযুক্ত স্টিকার এর ২টি ছায়াকপি এবং পাজেরো জিপ গাড়ির সামনে ‘বাংলাদেশ সচিবালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৩’ লেখাসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার বলেন, ৮ মে র্যাব-১ উত্তরার একটি টহল দল ডিউটি চলাকালীন গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ঢাকার শেরেবাংলা থানা এলাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় নিজেকে সচিব ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গ্রেফতারকৃত মোজ্জামেল হক চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নজনের সাথে প্রতারণা করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ৯ মে তার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়ে যান এবং গ্রেফতার এড়াতে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করেছে। এতে ১৫ মে পৌনে ৬টার সময় নগরীর খুলশীর জিইসি মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে ভুয়া সচিব ও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণার কথা অকপটে স্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় টাকা আত্মসাৎ এবং প্রতারণা সংক্রান্ত ২ টি মামলা পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।