ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে সৃষ্ট অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তত ৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইসাথে একটি সড়কের উপর গাছ ও মাটি ধসে পড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে সড়ক যোগাযোগ।
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার।
টানা ও অতিবর্ষণে পাহাড়ি ঢল নেমে কাচালং নদীর পানি বেড়ে উপজেলার মধ্যমপাড়া, মাস্টারঘোনা, লাইল্যাঘোণার প্রায় ৫-৭ হাজার মানুষ বন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও মারিশ্যা বাঘাইছড়ি সড়কের ৪কিলো, ৮ কিলো, ১২কিলো এলাকায় গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে তা অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
দীঘিনালা সাজেক সড়কের কবাখালি এলাকায় পাহাড়ি ঢলে বন্যায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে এবং যানচলাচল বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে।
রাঙামাটিতে ঝড়ো হাওয়ার কারণে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়াও জেলা শহরে মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎ বিছিন্ন থাকার পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংযোগ চালু হয়। যা আধা ঘন্টার মধ্যে আবার এলাকা ভেদে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে দুপুর ১২ টার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফের চালু হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার (২৭ মে) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্র।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিক মতো পাচ্ছি না, যার কারণে সার্বিক পরিস্থিতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি এখন কমেছে। যদি বৃষ্টি বাড়ে আরো গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি স্থানে গাছ পরে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে উপজেলার সাথে।
পিডিবি রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জালাল উদ্দিন জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টি এবং ঝড়ের কারনে বিভিন্ন স্থানে সংযোগ তারের উপর গাছ ভেঙ্গে পড়া এবং ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ার কারণে দীর্ঘসময় পুরো জেলার বিভিন্নস্থান বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলো। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আমরা সংস্কার শেষে সংযোগ দিতে শুরু করেছি। ইতোমধ্যে দুপুর ১ টা পর্যন্ত অন্তত ৬০ ভাগ সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়েছে। আশা করছি,আবহাওয়া যদি আবার বৈরি আচরণ না করে,তবে আগামী কয়েকঘন্টার মধ্যে শতভাগ পুনসংযোগ দেয়া সম্ভব হবে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোঃ মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, ‘আমি সকাল থেকে সবখানে কথা বলেছি,বড়দাগে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বাঘাইছড়িতে পাহাড়ী ঢলের কারণে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে,নতুন করে বৃষ্টি না হলে তা নেমে যাবে আশা করছি। বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কোথাও পাহাড়ধস বা প্রাণহানির কোন খবর নেই। তবুও আমরা সব জায়গা থেকে তথ্য নিচ্ছি। সব পাওয়ার পর সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে পারব।’