সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
২০০০ সালের ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে নতুন মোড় নিয়েছিল। তখন ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত সঞ্জীব চাওলার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল তাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
বর্তমানে ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জীব চাওলাকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ব্রিটেন থেকে ভারতে আনা হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। তবে জেল থেকে মুক্তিও পেয়েছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩ মে হাইকোর্টের স্টে অর্ডারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের সেই চার্জশিটে জানানো হয়, কোন কোন ম্যাচ ফিক্সিং করেছিলেন সঞ্জীব চাওলা। চার্জশিট অনুযায়ী, ‘অভিযুক্তের কাছ থেকে পাওয়া অডিও ও ভিডিও ক্যাসেট, সিএফএসএল রিপোর্ট এবং অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জানা গেছে বেশ কিছু ম্যাচে ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।’
চার্জশিটে ৬৮ জন সাক্ষী ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম সাবেক বিসিসিআই সচিব যশবন্ত লেলে। কোন কোন ম্যাচে ফিক্সিং করা হয়েছিল, তা উল্লেখ করা হয়েছে :
মুম্বাই টেস্ট ও কোচি ওয়ানডে ফিক্সিং হয়েছিল। ২০০০ সালে ভারত সফরে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডে খেলেছিল। সেই সিরিজের মুম্বাই টেস্ট এবং কোচির ওয়ানডে আলোচনায় আসে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, মুম্বাইতে প্রথমেই ঠিক হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাট করার সময় কোনোভাবেই ২৫০-এর বেশি রান তুলবে না। তবে সেই টেস্ট তিনদিনের মধ্যেই ভারত হেরে যায় শোচনীয় পারফরমেন্স করে। প্রথমে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৫ তোলে। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে ১৭৬ রানে অলআউট হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে একদমই দাঁড়াতে পারেনি ভারত। মাত্র ১১৩ রানে আলআউট হয়ে হয়ে যায় স্বাগতিকরা। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬৪ রান করে জয় ছিনিয়ে নেয়। কোনো ইনিংসেই ২৫০-এর বেশি রান না করে এভাবেই জয় পায় প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার সেই সময়ের অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ে ফিক্সারদের কাছে দেওয়া কথা রেখেছিলেন।
কোচিতে একদিনের ম্যাচ (২০০০, ৯ মার্চ) :
চার্জশিট অনুযায়ী, ৮ ও ৯ মার্চ হ্যান্সি ক্রোনিয়ে আর সঞ্জীব চাওলা ক্রমাগত ফোন করে গেছেন হামিদ কাসিমকে। কিংস কমিশনকে পরে জবানবন্দিতে ক্রোনিয়ে জানিয়েছেন, আন্ডার পারফর্ম করার জন্য ক্রমাগত তাকে চাপ দেওয়া হয়েছে।
ক্রোনিয়ের কথোপকথন : দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ। কারণ অনেকেই টাকা পায়নি।
সঞ্জীব : আমি তোমার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে দিচ্ছি। আগামীকাল নিজের হাতে টাকা জমা করছি।
ব্যাঙ্গালোর টেস্ট (মার্চের ২-৬, ২০০০) :
চার্জশিটে বলা হয়েছে, নিজেদের দলের অনেকের সঙ্গেই ফিক্সিংয়ের কথা বলেন ক্রোনিয়ে। তবে এই ম্যাচে ফিক্সিং করা হয়নি। কিংস কমিশনের সামনে দেওয়া ক্রোনিয়ের সাক্ষ্য অনুযায়ী।
২, ৩, ৪ নম্বর ওয়ানডে :
সেই ম্যাচগুলো ফিক্সিং না করা হলেও জানা গেছে, দলের ভিতরের খবর বুকিদের কাছে সরবরাহ করেছিলেন ক্রোনিয়ে। বেটিং করে অর্থ উপার্জনে সাহায্য করেছিলেন ক্রোনিয়ে।
পঞ্চম ওয়ানডে :
তখনকার রেকর্ডের বক্তব্য থেকে জানা গেছে, হ্যান্সি ক্রোনিয়ে দলগত এবং হার্সেল গিবসের ব্যক্তিগত স্কোর নিয়ে ফিক্সিং করতে সায় দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতিমতো ফলাফল হলে ক্রোনিয়েকে এক লাখ ১৪ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়ার কথাও জানান সঞ্জীব চাওলা। তবে ম্যাচের উত্তেজনার বশে এই ডিল ভুলে যান তিনি। রাজিও হয়নি।
খবর : এনটিভিবিডি’র।
খেলা